কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত আসামি সঞ্জয় রায়ের নাবালিকা ভাগ্নির রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এবার তাঁর দিদি ও জামাইবাবুর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হল। তাঁরা ওই নাবালিকার সৎ মা ও বাবা বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, নাতনির এই অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা তথা ওই নাবালিকার ঠাকুমা প্রতিমা সিং। নিজের ছেলে ভোলা সিং ও পুত্রবধূ পূজা সিংয়ের বিরুদ্ধে আলিপুর থানায় নাতনিকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
advertisement
তবে ঠাকুমা ছাড়াও লিখিতভাবে ভোলা ও পূজার বিরুদ্ধে তাঁদের মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন আলিপুরের ডি এল খান রোডের বিদ্যাসাগর কলোনির কয়েকজন বাসিন্দাও। পুলিশের এক কর্তা জানান, যেহেতু অভিযোগ খুনের, তাই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এর তদন্ত চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিমা সিং আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ভোলা সিং ও পুত্রবধূ পূজা সিং মিলে খুন করেছে তাঁর নাতনিকে। ঠাকুমার দাবি, নাতনি তাঁকে প্রায়ই লুকিয়ে এসে বলত যে বাবা ও সৎমা মিলে তাকে নানা অজুহাতে মারধর করে। এমনকি, নাতনির তাঁর ঘরে ঢোকাও ছিল নিষিদ্ধ। পড়াশোনার অজুহাতে, কিংবা সামান্য ভুলের কারণেও, তার উপর চলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
প্রসঙ্গত, ভোলা সিংয়ের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ছিলেন ববিতা রায়, যিনি আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের দিদি। বছর খানেক আগে ববিতার রহস্যমৃত্যুর পরই ভোলা বিয়ে করেন সঞ্জয়ের ছোট বোন পূজাকে। পূজাও তখন কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফলে, মাসি থেকে হয়ে ওঠেন ওই নাবালিকার সৎমা। অভিযোগ, দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় ছোট্ট মেয়েটির উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
গত ২০ অক্টোবর, কালীপুজোর রাতে আলিপুর থানার বিদ্যাসাগর কলোনি এলাকার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ওই নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ। আলমারির হ্যাঙ্গার থেকে আংশিক ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল সে। প্রতিবেশীরা দাবি করেন, বাবা ও সৎমা মিলে নিয়মিতভাবে মেয়েটিকে নিগ্রহ করত। ঘটনার পর উত্তেজিত স্থানীয়রা ভোলা ও পূজাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান এবং মারধরও করেন বলে জানা যায়। এবার তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হল খুনের মামলাও।
