রাজ্যে কৃষি নীতির যথাযথ রূপায়ণের ফলস্বরূপ ২০২৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে রেকর্ড ১৪৬.১৩ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে—যা আমাদের পরিশ্রমী চাষিদের শ্রম, দক্ষতা ও সরকারের সময়োপযোগী কৃষিনীতি–— উভয়েরই যৌথ সাফল্য। উৎপাদনের এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি মাথায় রেখে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যাতে কোনও বাধা সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করতে কৃষিজ বিপণন দফতর হিমঘর গুলিতে ৩০% স্থান সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করে আগাম পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ভাত খেলেও বাড়বে না ব্লাড সুগার! রান্নার আগে মাত্র ১৫ মিনিটের এই কৌশলেই মিলবে সমাধান
অপরদিকে, উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে আলুর দামের নিম্নগতি আগাম আনুধাবন করে কৃষিজ বিপণন দপ্তর ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক দের স্বার্থকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে একদিকে দ্রতগতিতে “Potato Procurement Scheme, 2025” চালু এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে এবং অন্যদিকে কৃষিজ বিপণন দপ্তরের অধিনস্ত সুফল বাংলার দ্বারা ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ৭৫০০০ কুইন্টাল আলু ক্রয় করে আলুর দামের পতন রোধ করেন এবং ফলস্বরুপ কৃষকরা আলুর ন্যায্য মূল্য লাভ করেন।
এই উৎপাদনকে সুরক্ষিত রাখতে চলতি বছরে রাজ্যের ৫১৯টি কোল্ড স্টোরেজে মোট ৭০.৮৫ লাখ মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে, যা এই খাতে এক নতুন মাইলফলক।
অক্টোবরের শেষদিকে আকস্মিক বৃষ্টিপাত ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলির বন্যাজনিত কারণে আলু রোপণে বিলম্ব হওয়ায় বর্তমানে নতুন আলুর যোগান সীমিত। ফলে রাজ্যবাসী এখনও সংরক্ষিত আলুর ওপরেই নির্ভর করছেন। এ পরিস্থিতিতে কোল্ড স্টোরেজগুলিতে এখনও প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এই আলু যদি ৩০ নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে বাজারজাত করতে হয়, তাহলে হঠাৎ অতিরিক্ত যোগানের কারণে আলুর দামে অস্বাভাবিক পতন ঘটার আশঙ্কা থাকবে, যা চাষিদের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করবে। একই সঙ্গে ডিসেম্বর মাসে বাজারে আলুর সম্ভাব্য অপ্রতুলতা ও বাইরের রাজ্যের আলুর ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ার পরিস্থিতিও সৃষ্টি হতে পারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের স্বার্থরক্ষা এবং তাঁদের উৎপাদিত আলুর অভাবী বিক্রি রোধের লক্ষ্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রগ্রেসিভ পটেটো গ্রোয়ার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজ্যের হিমঘরগুলোতে আলু সংরক্ষণের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানিয়ে মাননীয় বিভাগীয় মন্ত্রী ও মাননীয় বিভাগীয় প্রধান সচিব মহোদয়ের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রেরণ করেছেন।
অন্যদিকে, নির্ধারিত সংরক্ষণকাল ৩০ নভেম্বর শেষ হওয়ার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চাষিদের বিভ্রান্ত করে নিজেদের মুনাফা বাড়ানোর অপচেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক দের অভাবী বিক্রি রোধ এবং রাজ্যবাসীর সুলভ মূল্যে আলু প্রাপ্তি—এই দুই দায়িত্বকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এ বছরে হিমঘর গুলিতে আলু সংরক্ষণের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত যেমন চাষিদের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করবে, একই সঙ্গে রাজ্যের বাজারে আলুর যোগানকে স্থিতিশীল ও সুষম রাখবে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষিজ বিপণন দপ্তর আগামীতেও কৃষকদের পাশে থেকে তাঁদের সুরক্ষা, উন্নতি ও আর্থিক স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কৃষিজ বিপণন দফতর সূত্রে খবর। আজ দফতর জানাল আলু নিয়ে খুব সমস্যা চলছিল।
