নিউজ18 বাংলাকে জয় গোস্বামী বললেন, ‘‘সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণ সংবাদ আমাকে আহত করল। নিশ্চয়ই বাংলার সাহিত্য জগতে তথা ভারতের সাহিত্য জগতে প্রবল শূন্যতা এনে দিল। মনে আছে, আমার যৌবনে তাঁর ‘দৌড়’ নামক উপন্যাসটি পড়েছিলাম। তার পর একে একে ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’। তার পর থেকে দীর্ঘদিন তিনি লিখে গিয়েছেন। কখনওই নিজেকে থামাননি। মাঝে একটি বছর সম্ভবত বিরতি নিয়েছিলেন স্বাস্থ্যের কারণে। কিন্তু ওঁর লেখা নিয়মিত পড়েছি। তা ছাড়া ছোটদের জন্য লেখাগুলি বড় আকর্ষণীয়। কেবল পশ্চিমবঙ্গে নয়, ওপার বাংলাতেও সমরেশ মজুমদারের লোকপ্রিয়তা আছে। ‘ছিল’ শব্দটা ব্যবহার করব না, লেখক হয়তো চলে যান, তাঁর নতুন লেখা আর পাওয়া যায় না। কিন্তু তাঁর যে লেখা থেকে গেল, তার প্রতি মানুষের আকর্ষণ থেকে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। তাঁর পরিবারের, বন্ধু, আত্মীয়দের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’’
advertisement
দীর্ঘদিন সংবাদপত্র, সাহিত্যপত্রে কাজ করেছেন জয় গোস্বামী। সেই সূত্রেও সমরেশ মজুমদারের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি হয়েছে তাঁর। কবির কথায়, ‘‘আমাদের খুবই সস্নেহ এবং সশ্রদ্ধ সম্পর্ক ছিল বজায় ছিল আমাদের মধ্যে।’’
আরও পড়ুন: চলে গেলেন কালবেলা, সাতকাহন-এর স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার
নিউজ18 বাংলায় জয় গোস্বামীর স্মৃতিচারণ ‘‘মনে পড়ে যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গেরই একটি সফরের কথা। শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওঁকে ডি.লিট দেওয়া হচ্ছিল। সে সময়ে আমিও সেখানে ছিলাম। তৎকালীন রাজ্যপাল অনুষ্ঠানের পর সকলকে নিয়ে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করেছিলেন। এদিকে আমার তো খাওয়া দাওয়া নিয়ে বেশ ঝক্কি আছে। বাইরের খাবার খেতে পারি না, তাই আমার স্ত্রী আমার জন্য রেঁধেছিলেন আলাদা করে। তাই সেই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পারিনি। কিন্তু পরে শুনি সমরেশ মজুমদার বারবার শুধু আমারই খোঁজ নিচ্ছিলেন। সবাইকে প্রশ্ন করছিলেন, ‘‘জয় কোথায় গেল, জয়কে ডেকে নিয়ে এসো। ও কখন খাবে?’’ পরে দেখা হলে জিজ্ঞাসা করন, আমি কখন খেয়েছি, ঠিকঠাক খেয়েছি কিনা। বড় স্নেহ করতেন আমায়। এই উদ্বেগ তারই প্রমাণ।’’