পাশেই ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস। ঝাঁ তকতকে আবাসনের ভিড়। পঞ্চসায়র। আধুনিক জীবনযাত্রার মাপকাঠি এখানে প্রতিদিনের নিয়ম। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবের পর মুহূর্তে বদলে গিয়েছে সবকিছু।
এ আঁধার অন্ধকারের চেয়েও গাঢ়। ঘূর্ণিঝড়ের পর কেটে গিয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঘড়ির কাঁটা যত এগিয়েছে ততই ভেঙেছে ধৈর্যের বাঁধ। অথচ, অপেক্ষাই সার। দেখা নেই CESC কর্মীর। সোমবারও নেই বিদ্যুৎ। পানীয় জলের অভাব। এ এক অদ্ভুত ছবি৷
advertisement
রাজপথ ছেড়ে পথ ধরলেই পঞ্চসায়র এলাকায় ভিড় বৃদ্ধদের। বেশ কয়েকটি বৃদ্ধাশ্রমের শান্তির ঠিকানা। অথচ আমফানের জেরে বিদ্যুৎহীনতার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস বেঁধেছে অন্ধকার। কবে আসবে বিদ্যুৎ? জানা নেই বাসিন্দাদের কাছে।
ঝড় এসেছিল। ভয়ঙ্কর ঝড়। সেই ঝড়ে লন্ডভন্ড কাকদ্বীপ থেকে কলকাতা। বাদ নেই পঞ্চসায়র। বৃদ্ধের শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা সমস্যা। সমস্যার সমাধান ওষুধ। বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ ফ্রিজ। নির্দিষ্ট তাপমাত্রার খোঁজে ফ্রিজেই বন্দি বেশিরভাগ জীবনদায়ী ওষুধ। অথচ, টানা কয়েকদিন বিদ্যুৎ না থাকায় আরও শরীর খারাপের ভিড় বাড়ছে আবাসিকদের মধ্যে। কী করে বৃদ্ধদের সামাল দেওয়া যাবে, সেটাও বুঝে উঠতে পারছেন না বৃদ্ধাশ্রমের কর্মীরা। বাড়িতে বৃদ্ধ। অশীতিপর চোখ খুঁজছে ফ্যানের একচিলতে বাতাস। কিন্তু, গুমোট গরমে ধৈর্যের বাঁধ সব ভেঙেছে। বাড়ির চার দেওয়ালে বিন্দু বিন্দু রাগ নেমে এসেছে রাস্তায়। প্রতিবাদের ভাষা ঘর ভুলেছে। কেন CESC কর্মীরা আসছেন না? কোথায় তাঁরা বুঝে উঠতে পারছে না পঞ্চসায়র।
অতীতে এমন ভোগান্তির কথা মনে করতে পারছে না পঞ্চসায়র। বিদ্যুৎ না থাকায় বাড়ি কিংবা বহুতলে চলছে না পাম্প। জলহীন জীবন। অন্য জায়গা থেকে জল টেনে, নয়তো জল কিনে দিন গুজরান। কবে মিটবে সমস্যা? প্রশ্ন একটাই। অথচ, বেশিরভাগ বাসিন্দার কাছেই অধরা উত্তর।