পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা পূজা গিরি, বয়স ৩২। গত তিনমাস ধরে অসহ্য পেটের যন্ত্রণায় কাবু হয়ে যান তিনি। তীব্র পেটে ব্যথা নিয়ে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে কলকাতায় এসে ভর্তি হন নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তাঁর শরীরে সিটি স্ক্যান সহ একাধিক পরীক্ষা হয়। অগ্ন্যাশয়ে একটা টিউমার দেখা যায়৷ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই টিউমারটি কেটে বাদ দিতে হয়। যার ফলে বাদ পড়ে যায় পোর্টাল ভেনের একাংশ। তবে সেই জায়গাতেই লাগানো হয় আর্টিফিশিয়াল ভেন। রোগীর দেহের অন্য অংশ থেকে ভেন নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয় অগ্ন্যাশয়ে। এই বিরল অস্ত্রোপচার করতে সময় লাগে প্রায় সাত ঘণ্টা।
advertisement
আরও পড়ুন: শহরে বাড়ছে আতঙ্ক! এবার কলকাতায় অ্যাডিনোভাইরাসে মৃত্যু কিশোরীর
সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক উৎপল দে জানান, 'অগ্ন্যাশয়ের তিনটি অংশ। এই তরুণীর দেহে টিউমারটি ছিল বডি ও টেল জুড়ে। লিভারে রক্ত আসে পোর্টাল ভেনের মাধ্যমে। মানব দেহে এই ভেনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই তরুণীর ক্ষেত্রে টিউমারটি সেটা ধরে নিয়েছিল। ফলে এটা কেটে বাদ দিলে তাঁর পক্ষে বাঁচা আর সম্ভব নয়। অনেক সময় এই ধরনের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে টেবিলেই মৃত্যু হয় রোগীর। এই ভেন কেটে বাদ দিতে হয় খুব সাবধানে।'
এর পাশাপাশি ওই শল্য চিকিৎসক জানিয়েছেন, 'সারা পৃথিবীতে এই ধরনের অস্ত্রোপচার মোট দশটা হয়েছে। আমরা যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছি তা আরও কম হয়েছে। কলকাতায় হয়তো এটা প্রথম।'
সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক উৎপল দে-র নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচার হয়। এ ছাড়াও তাঁর টিমে ছিলেন চিকিৎসক কৃষ্ণা প্রকাশ, চিকিৎসক রিয়াজ আনসারি ও চিকিৎসক বিপাশা সাহা। নতুনভাবে জীবন ফিরে পেয়ে খুশি রোগী ও তাঁর পরিবার। ওই তরুণী জানান, 'এখন আমি অনেক ভাল আছি।যেভাবে চিকিৎসকরা আমায় সুস্থ করে তুললেন তা আমি সারা জীবন মনে রাখব। ওনারা আমার জন্য অনেক করেছেন।'