কলকাতা হাইকোর্ট মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের বিষয়টি নিয়ে নিজের পুনর্বিবেচনার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল বিধানসভার অধ্যক্ষ৷ তার পরেও নিজের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিতই ছিলে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপি-র টিকিটে জয়ী হন মুকুল রায়৷ ২০২১ সালেরই ১১ জুন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি৷ এর পরই মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ মুকুল রায়ের দলবদলের প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মাধ্যমে তাঁর তৃণমূলে যোগদানের ভিডিও ফুটেজও জমা দেওয়া হয় বিজেপি-র তরফে৷
advertisement
আরও পড়ুন: হরিদেবপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট শিশুর মৃত্যু, গর্জে উঠলেন ফিরহাদ! দিলেন হুঁশিয়ারিও
তার পরেও অবশ্য এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্পিকার জানিয়ে দেন, মুকুল রায় বিজেপি-তেই রয়েছেন৷ স্পিকারের এই রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি৷ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গত ১১ এপ্রিল সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভার স্পিকারকে নির্দেশ দিয়েছিল৷ মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগদানের সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও ফুটেজকেও প্রামাণ্য নথি হিসেবে গণ্য করতে বলেছিল আদালত৷
আরও পড়ুন: রাতে এল ফোন, সকালেই দিল্লি পৌঁছানোর নির্দেশ! সুকান্তকে নিয়ে বিজেপিতে শোরগোল
হাইকোর্টের নির্দেশের পর ফের দু' পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফায় শুনানি সারেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার পরেও তিনি জানিয়ে দিলেন, মুকুল রায় বিজেপি-তেই রয়েছেন৷ ফলে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের প্রশ্ন ওঠে না৷ এই পরিস্থিতিতে মুকুল রায়ের ইস্তফাপত্র নতুন করে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ, বিশেষত স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তিনি নানাভাবে বিপর্যস্ত। তাই পিএসি চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা দেওয়ার কথা তিনি ভাবছিলেনই। কিন্তু দলের তরফে সদর্থক নির্দেশ না আসার তা করতে পারছিলেন না মুকুল। এবার সেই বার্তা আসতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সেরে ফেললেন তিনি। যদিও বিজেপির তরফে বলা হচ্ছে, চাপের মুখেই নতিস্বীকার করেছেন মুকুল। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজনৈতিক চাপ মুকুল রায় আগেও সামলেছেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি যেভাবে নানা দিক থেকে বঙ্গ রাজনীতির মূল স্রোতের বাইরে চলে যাচ্ছিলেন, তাতে এটাই স্বাভাবিক ছিল। যদিও পিএসি চেয়ারম্যান থেকে ইস্তফা দিলেও মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের মামলা এখনও বিচারাধীন, সেই মামলা নিয়ে বিজেপি কতদূর এগোয়, সেটাই এখন দেখার।