কলকাতা: মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। শুভেন্দু অধিকারীর মামলায় পরাজিত বিধানসভার স্পিকার। দলবিরোধী কাজ করেছেন মুকুল রায়। রায়ে এমনই জানাল ডিভিশন বেঞ্চ। আর এই রায়ের ফলে হাইকোর্টে জিতলেন শুভেন্দু অধিকারী ও বিধায়ক অম্বিকা রায়। তাঁরাই মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দলবিরোধী কাজের দায়ে দেশের ইতিহাসে প্রথম কোনও বিধায়কের পদ খারিজ করল আদালত।
advertisement
মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্তও ত্রুটিযুক্ত, তাই এদিনের রায়ে তাও খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। এরপরই এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ”বিধানসভার কাস্টডিয়ান হলেন অধ্যক্ষ। আমি যে ভাবে কেস দেখেছিলাম, তার প্রেক্ষিতেই আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম। আমি অর্ডার কপি দেখতে চাই। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী নেওয়া হবে, সেটা আমি দেখব।” এরপরই বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ”বিরোধী দলকে দেখেছেন, কোনওদিন স্পিকারের প্রশংসা করতে? আমি আমার কাজ করেছি। সংবিধান মেনেই কাজ করা হয়েছে। পদত্যাগ উনি চাইতেই পারেন। কিন্তু কিছুদিন আগে দিল্লিতে একটা বিস্ফোরণ হল, অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন। আগে সেটা করুক তাহলে। আমি রায় খতিয়ে দেখব। তারপর বাকিদের ক্ষেত্রে কী হতে পারে, সেটা দেখব।”
মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খাদিজের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ দীর্ঘদিন ধরে হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয় ৷ মামলাটি বিচারাধীন ছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মোঃ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে ৷ সেই মামলার শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা লিখিত বক্তব্য জমা দেন ৷ বিরোধী দলনেতা যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাতে স্বাক্ষর করতে সশরীরে কলকাতা হাইকোর্টে এসেছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক ৷
প্রতিষ্ঠার সময় থেকে তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন মুকুল ৷ ধীরে ধীরে দলের ভিতর তাঁর কাজের পরিধি বাড়তে থাকে ৷ রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশই মনে করত, গুরুত্বের বিচারে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই ছিলেন মুকুল ৷ কিন্তু মতানৈক্য়ের জেরে ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর তিনি তৃণমূল ছাড়েন৷ দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন৷ ২০১৯ সালের লোকসভা ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সামনে থেকে নেতৃত্বও দেন মুকুল ৷ ২০২১ সালে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়ী হন ৷ তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্য়ায়কে পরাজিত করেন ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটে ৷ এরপর ওই বছরের ১১ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যদের উপস্থিতিতে পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে মুকুল রায়ও তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন ৷ খাতায় কলমে বিজেপি বিধায়ক হলেও তৃণমূলে নিজের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন মুকুল৷ ওই বছরের ২৫ জুন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি-র সদস্য নির্বাচিত করেন ৷ পরে ৯ জুলাই বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়কে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয় ৷ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলে
