মানিকের জামিনের আর্জি জানিয়ে এ দিন তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, ইডি-র সঙ্গে প্রথম থেকে সহযোগিতা করা হলেও গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল বিধায়ককে৷ যে কোনও শর্তে জামিনের আবেদন জানান তিনি৷
আরও পড়ুন: লটারিতে এক কোটি জয় তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রীর! শুভেন্দুর অভিযোগ ঘিরে চলছে তরজা
যদিও ইডি-র হয়ে সওয়াল করতে উঠে মানিকের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন ইডি-র আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি৷ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের নিবিড় যোগ পাওয়া গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ পাশাপাশি, পার্থ এবং মানিকের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথাও উল্লেখ করেন ইডি-র আইনজীবী৷
advertisement
এর আগে মানিকের ছেলে শৌভিক চক্রবর্তীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ইডি৷ এ দিন আদালতে মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী এবং তাঁর পিসেমশাইয়ের নামে থাকা একটি অ্যাকাউন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইডি-র আইনজীবী৷
আরও পড়ুন: সায়ন্তনের 'বিস্ফোরক' চিঠি! ঘরে, বাইরে তোলপাড় গেরুয়াশিবির! মুখ খুলল তৃণমূল-বিজেপি!
চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে ইডি-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে একটি জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ছিল মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টোচার্যের৷ যিনি সম্পর্কে তাঁর পিসেমশাই হন৷ ১৯৮১ সালে সেই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়৷ ইডি-র অভিযোগ, ২০১৬ সালে প্রয়াত হন মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী৷ কিন্তু তার পরেও সেই তথ্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানাননি মানিকের স্ত্রী বা তাঁদের পরিবারের কেউ৷ বরং ২০১৯ সালে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া কেওয়াইসি তথ্যে মৃত ব্যক্তির নাম এবং প্যান কার্ডের মতো তথ্য ব্যবহার করে কেওয়াইসি আপডেট করা হয়৷ ওই অ্যাকাউন্টেই মানিকের স্ত্রীর নামে একটি ২ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটও রয়েছে৷
ইডি-র আইনজীবী প্রশ্ন করেন, কোনও উপার্জন ছাড়া কীভাবে ২ কোটি টাকা পেলেন মানিকের স্ত্রী? পাশাপাশি, ইডি-র আইনজীবী আরও দাবি করেন, মৃত ব্যক্তির তথ্য ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চালু রেখে গুরুতর অপরাধ করেছেন মানিকের স্ত্রী৷
কটাক্ষের সুরে ইডি-র আইনজীবী আরও বলেন, 'সাধারণ মানুষ পরিবারের স্বার্থে নিজেকে ঢাল করেছে, কিন্তু এখানে নিজের স্বার্থেই পরিবারকে ঢাল করেছেন মানিক বাবু৷' শুধু মানিকের স্ত্রীই নন, তাঁর ছেলে সহ পরিবারের সদস্যদের বাইরের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে এরকমই রহস্যময়
অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে বলেও আদালতে দাবি করেছে ইডি৷ দু' পক্ষের সওয়াল শুনে শেষ পর্যন্ত আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত৷ একই সঙ্গে সিবিআই এবং ইডি-র তদন্তকারী আধিকারিকরা জেলে গিয়েও মানিককে জেরা করতে পারবে বলে জানিয়ে দেন বিচারক৷