টানা বর্ষণের ফলে শনিবার রাত থেকে ধস নামতে শুরু করে ও এর জেরে বন্ধ হয়ে যায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তাবাজারের কাছে ২৯ মাইল ভালুখোলায় জল উঠে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এর মাঝেই মিরিক ও দুধিয়ার মাঝের লোহার সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ায় শিলিগুড়ির সঙ্গে মিরিক ও দার্জিলিংয়ের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন।
advertisement
এই আবহে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কাল সোমবার উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে থাকছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সূত্রের খবর, বৃষ্টি ধসে বিপর্যস্ত এলাকায় যেতে পারেন তিনি। রবিবার নিজেই তিনি জানিয়েছেন শনিবার রাত থেকে টানা ১২ ঘণ্টা প্রায় ৩০০ মিলিমিটারের কাছাকাছি বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায়।
এ ছাড়া যে সমস্ত পর্যটকরা দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকে বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছেন, তাঁদের হোটেল থেকে না বেরোনোর পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বিকেলের মধ্যেই তিনি পৌঁছে যাবেন শিলিগুড়িতে। সেখান থেকেই বন্যা পরিস্থিতি এবং ত্রাণ কার্যক্রমের উপর নজর রাখবেন নিজেই।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘মিরিক, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে প্রায় ৭টি জায়গায় ধস নেমেছে। তার মধ্যে বৃষ্টি। লোহার সেতু ভেঙে গিয়েছে মিরিকে। দার্জিলিংয়েও একটা ভেঙেছে। কালিম্পংয়ের রাস্তা বন্ধ। যে পর্যটকরা আটকে আছেন, আমি বলব, যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন। অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া যেন না দিতে হয়। প্রশাসন যেন সেই বিষয়টা দেখে। প্রয়োজনে সরকার দেখবে। আমরা সকলকে সেফলি নিয়ে আসব। কেউ যেন তাড়াহুড়ো করতে না যান। আপনারা আমাদের দায়িত্ব। সকলকে ঠিকমতো আমরা পৌঁছে দেবো।’’
ডিভিসিকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আর দক্ষিণবঙ্গে ডিভিসি জল ছেড়েছে গাদাগাদা। দক্ষিণবঙ্গের ঘাটাল ভাসছে। ঘাটাল নিচু জমির এলাকা। সেই কারণে জল জমছে। ডিভিসি জল ছাড়লেই জমে যায়। তার উপর গঙ্গা ভর্তি। সামনেই জোয়ার আছে। গঙ্গা যদি ভর্তি থাকে জল বেরোবে কোথা দিয়ে? সারা পৃথিবীতে বিপর্যয় চলছে। দীর্ঘদিন প্রকৃতিকে অবহেলা করার জন্য ভুগতে হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি গিয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য প্রশাসনের ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছে। নবান্নে খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। এছাড়া পর্যটকদের সহায়তার জন্য হেল্পলাইন খুলেছে দার্জিলিং পুলিশ। যোগাযোগের নম্বর +৯১ ৯১৪৭৮ ৮৯০৭৮। তিস্তার পাড়ের প্রায় দেড়শো পরিবারকে নিরাপদে সরানো হচ্ছে। নবান্নের পক্ষ থেকে জেলায় প্রশাসনিক আধিকারিকদের টহল ও নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।