গতকালই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এলাকার সাংসদ শিশির অধিকারীকে নিজের গুরুদেব বলে সম্বোধন করেছিলেন স্থানীয় পুরপ্রধান সুবল মান্না৷ প্রকাশ্যে শিশির অধিকারীর প্রশংসা করার জন্য ইতিমধ্যেই কাঁথির পুরপ্রধান সুবল মান্নাকে শো কজও করেছে তৃণমূল৷ সেই প্রসঙ্গেই এ দিন এই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন কুণাল৷
আরও পড়ুন: শিশির অধিকারীকে প্রণাম, প্রশংসা! কাঁথির পুরপ্রধানকে শো কজ করল তৃণমূল
advertisement
কাঁথির ওই অনুষ্ঠানে গিয়ে শিশির অধিকারীর পায়ে হাতে দিয়েও প্রণাম করেছিলেন সুবল মান্না৷ যা নিয়ে শাসক দলেরই অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে৷ কারণ বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ শিশির অধিকারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তৃণমূল৷ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আগামী লোকসভা নির্বাচনে দুই দলের প্রেস্টিজ ফাইট৷ এই অবস্থায় দলেরই পুরপ্রধানের মুখে শিশির অধিকারীর প্রশংসা একেবারেই ভাল ভাবে নেয়নি শাসক দল৷ তড়িঘড়ি শো কজ করা হয় কাঁথির পুরপ্রধানকে৷
এই প্রসঙ্গেই প্রশ্ন করা হলে পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্চ নেতা কুণলা অবশ্য কড়া শাস্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তৃণমূল নেতা বলেন, সিনিয়র মানুষের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা সৌজন্য। কিন্তু তার পরে উনি যা করেছেন সেটা আদিখ্যেতা। উনি অত্যন্ত অন্যায় কাজ করেছেন। দলে সর্ষের মধ্যে ভুত থাকলে সেই সর্ষে বাছাইয়ের কাজ চলছে।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাঁথির পুরপ্রধান৷ সুবল মান্না বলেন, ‘১৯৮৪ সাল থেকে তাঁদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল৷ ২০২০ সালে ওরা বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সময় থেকেই ওদের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই৷ শুধু আমার স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে দিব্যেন্দু অধিকারী আমাকে ফোন করেছিলেন৷ গতকাল স্কুলের ওই অনুষ্ঠানে শিশিরবাবুও উপস্থিত থাকবেন আমি জানতাম না৷ কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পর শিশিরবাবু উপস্থিত আছেন বলে আমি চলে এলে প্রায় এক হাজার শিশু এবং অভিভাবক-অভিভাবিকাদের কাছে খারাপ বার্তা যেত৷ শিশিরবাবুকে প্রণাম করে অন্যায় করে থাকলে তার বিচার ভগবান করবে৷’
তবে অভিযুক্ত সুবল মান্না যাই বলুন না কেন, তাঁর উপরে যে কড়া শাস্তির খাঁড়া নেমে আসতে পারে, তা এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কুণাল৷ একই সঙ্গে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলায় কোনওভাবেই শুভেন্দু অধিকারী অথবা তাঁর পরিবারের সঙ্গে দলের কোনও নেতার ঘনিষ্ঠতা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না দল৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই দলের মধ্যে এখনও শুভেন্দু অথবা অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ কেউ থাকলে দল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ৷