প্রায় দু'মাস ধরে তাপে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ। স্বাভাবিকভাবেই চাতকের মতো বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা সাধারণ মানুষ কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে খুশি। শনিবার দুপুরেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, আগামী দু-তিন ঘণ্টায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে পুরুলিয়া, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে । বৃষ্টির সঙ্গে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে। শনিবার থেকে মেঘলা আকাশের দক্ষিণের বেশ কিছু জেলায়। শুধু কলকাতা নয়, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রবি ও সোমবার ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা হাওয়া সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির শিলা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায়। হতে পারে কালবৈশাখীও।
advertisement
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রূকুটি। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নিম্নচাপের সতর্কতা। আগামী বুধবার ৪ মে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। ৫ মে ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা। তারপর ক্রমশ দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। আরও শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় কিনা এবং কোন দিকে অভিমুখ থাকে সে দিকেই নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহবিদদের দাবি, নিম্নচাপ এগোবে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে। ফলে নিম্নচাপের গতিবিধির ওপরে নজর রাখা হচ্ছে। মে মাসেই আয়লা, ইয়াস, আমফানের ধ্বংসলীলা দেখেছে বাংলা। ফলে মে মাসে সিস্টেম তৈরি হলেই আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। তাই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের পর থেকেই চিন্তা বেড়েছে উপকূলের বাসিন্দাদের। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী বুধবার ৪ মে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঘনীভূত হবে ঘূর্নাবর্ত। শক্তিশালী হয়ে তা নিম্নচাপে পরিণত হবে। এগোবে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে।
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে থেকে মধ্য বঙ্গোপসাগর হয়ে আসতে থাকায় সিস্টেম আরও শক্তিশালী হবে বলেই আশঙ্কা। সেক্ষেত্রে তা কবে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে? অভিমুখ কোন দিকে থাকবে? হাজারও প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সিস্টেমের উপর নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা। কিন্তু আবহাওয়াবিদদের মতে, এই মে মাস ঘূর্ণিঝড়ের তৈরি হওয়ার পক্ষে উপযুক্ত। আরবি মাসের ঘূর্ণিঝড় গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় বাংলার দিকে ধেয়ে আসে। ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আয়লার বীভৎস ধ্বংসলীলা দেখেছে গোটা বাংলা। ২০২১ অর্থাৎ গত বছরের ২৬ মে ইয়াস তাণ্ডব চালিয়েছে বাংলায়। তার আগের বছর ২০২০ সালের ২০ মে আমফান ধ্বংস করে দিয়েছে ঘরবাড়ি চাষের জমি। তাই মে মাস যে চিন্তার তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।