শিশুদের বিভিন্ন টিকা না নেওয়ার ফলে ফিরে আসছে চিকেন পক্স বা হামের মতো রোগ। কিছুদিন আগে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল এই এলাকার বেশ কয়েকটি শিশু চিকেন পক্স নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। অনেকেই এর চিকিৎসা করিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে একই সঙ্গে বুধবারে শিশুদের টিকা করণ ক্রমশ কমছিল এই তিনটি ওয়ার্ডে।
এরপরই তৎপর হয় কলকাতা পুরসভা। বৃহস্পতিবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তা-ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এক বিশেষ বৈঠকে। সেখানেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের উপস্থিতিতে এলাকার বাসিন্দাদের বার্তা দেওয়া হয় কুসংস্কার ছেড়ে টিকাকরণের শিশুদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে।
advertisement
শহরজুড়ে তিন মাস ধরে চলছে বাচ্চাদের নানা ধরনের টিকাকরণ কর্মসূচি। দেওয়া হচ্ছে বিসিজি, ইনজেকটেবল পোলিও ভ্যাকসিন, রোটা ভাইরাসের মত টিকা। কিন্তু, কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, শহরের সর্বত্র মোটামুটি সাড়া মিললেও কিছু জায়গায় এলাকার মানুষের মধ্যে অনীহা নজরে আসছে। যা নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্যকর্তারা।
ডেপুটি মেয়র অতিন ঘোষ বলেন, কুড়ি থেকে ত্রিশ শতাংশ কম টিকাকরণ হয়েছে এই ওয়ার্ড তিনটিতে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বোঝানোর উদ্যোগ নিলে এই সমস্যা মিটে যাবে বলেও তিনি মনে করেন।
ইনটেন্সিফাইড মিশন ইন্দ্রধনুস-এর আওতায় মার্চ, এপ্রিল এবং মে-তিন মাসের বিশেষ টার্গেট নিয়ে নামা হয়েছিল। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, যেসব অভিভাবকরা বাচ্চাদের টিকাকেন্দ্রে নিয়ে আসেননি, সেই শিশুদের জন্য এই বিশেষ অভিযান। কিন্তু শহরের অন্যত্র কমবেশি সাড়া মিললেও কিছু এলাকায় খুবই অনীহা নজরে আসছে।
শিশুদের বিসিজি, পোলিও ছাড়াও পাঁচটা ভ্যাকসিন একসঙ্গে দেওয়া হয় একটা সিঙ্গেল ভ্যাকসিনের মধ্যে। তার নাম পেন্টাভ্যালেন্ট (হেপাটাইটিস-বি, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হেমোফিলিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা বি রোগ প্রতিরোধী)। পাশাপাশি, ইনজেকটেবল পোলিও ভ্যাকসিন, রোটা ভাইরাস, নিউমো কক্কাল ভ্যাকসিন, মিজলস এবং রুবেলা, জাপানি এনসেফেলাইটিসের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, এই ভ্যাকসিনগুলি রোগ প্রতিরোধ তৈরি করে। কিন্তু, এর মধ্যে অনেক রোগের চিকিৎসা নেই। যার চিকিৎসা রয়েছে, সেগুলি যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। টিকা নেওয়ার সময় বাচ্চাদের একটু কষ্ট হতে পারে। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের সুস্বাস্থ্যের জন্য এই টিকাগুলি নেওয়া জরুরি।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে সচেতনতা শিবিরে এলাকার মানুষদের আহ্বান জানান টিকাকরণের অংশগ্রহণের জন্য। বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য টিকা কতটা জরুরি সেই ব্যাখ্যাও তিনি করেন সচেতনতা শিবিরে।
১৫ নম্বর বোরো চেয়ারম্যান রঞ্জিত শীল বলেন, এই সমস্যা নতুন নয়। এর আগেও এসব এলাকায় প্রচার করেছি। পালস পোলিওর সময়। তারপর টিকাকরণ ভালোই চলছিল। আবার তাঁদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার মানুষকে সচেতন করব। এলাকায় মাইকিং এবং সচেতনতা মিছিল করা হবে প্রতি বুধবার।