বৃহস্পতিবার কেএমডিএ'র তত্ত্বাবধানে থাকা সব সেতু নিয়ে তিনি বৈঠক করেন দফতরের আধিকারিকদের সাথে। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে শহরের একাধিক উড়ালপুলগুলির অবস্থা জানতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অমিতাভ ঘোষালের নেতৃত্ব একটি ব্রিজ এক্সপার্ট কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়। এই কমিটি শহরের সব উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। গোটা দেশের বেশ কয়েকটি সংস্থা স্টুপ, লাসা, আইটিএল কোটেক্স ও লি অ্যাসোসিয়েটস উড়ালপুল পরীক্ষা করছে।
advertisement
সব মিলিয়ে ১৬টি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। যার মধ্যে ১১টি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে চিংড়িহাটা ও কালীঘাটের অবস্থা ভীষণ খারাপ বলে উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। ই এম বাইপাস থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে পৌছনোর জন্য তৈরি হয় চিংড়িহাটা উড়ালপুল। এই ব্রিজের নকশা নিয়ে সমস্যা আছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মাত্র ১২ বছরের পুরনো এই সেতুর পিলারের অবস্থানে সমস্যা আছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে এই সেতুর সাময়িক মেরামতি করা হয়েছিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সেতু সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে নতুন সেতু বানাতে হবে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, "আমরা ওখানে নতুন সেতু তৈরি করব। ই এম বাইপাস থেকে একেবারে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে৷ তারপরে বাজেট দেখে কাজ এগোবে।"
অন্যদিকে দক্ষিণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেতু কালীঘাট সেতুর অবস্থাও খারাপ। ৫০ বছরের পুরনো এই ব্রিজের নকশা এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে ব্রিজের কাঠামো দেখতে গিয়ে নানা ধরণের সমস্যার মধ্যে পড়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা। এই সেতুর একটি স্প্যানে ত্রুটি আছে। কি করে এই স্প্যান মেরামত করে কাজ চালানো যায় তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, "দক্ষিণের এই সেতু তো একেবারে বন্ধ করা যাবে না। তাতে যান চলাচলের ওপর প্রভাব পড়বে। অন্যদিকে এই সেতুর যা অবস্থা তাতে একে সারাতেও হবে শীঘ্রই। ফলে একটা মাস্টার প্ল্যান বানানো হচ্ছে।"
যে সমস্ত সেতুর ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়ে গিয়েছে তার মধ্যে আছে উল্টোডাঙা সেতু, শিয়ালদহ সেতু, অরবিন্দ সেতু, বঙ্কিম সেতু, বিজন সেতু, বাঘাযতীন সেতু, চেতলা সেতু ও আরজিকর ক্যানেল ব্রিজ। ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন কোথাও ভার কমিয়ে, কোথাও মেরামতি করে এই সব সেতু ব্যবহার করা যাবে। যে সব সেতু পরীক্ষা করানো হবে তার মধ্যে ঢাকুরিয়া সেতু, চিৎপুর সেতু,আম্বেদকর সেতু আছে। তবে এই সব সেতু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে পুরোপুরি রাস্তা বন্ধ করলে সমস্যায় পড়বে কলকাতার যান চলাচল। ফলে কলকাতা পুলিশের সাথে সংযোগ রেখেই শুরু হবে বাকি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
আবীর ঘোষাল