কলকাতা: শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজভবন সংক্রান্ত মন্তব্যের পরে গত মঙ্গলবার রাতে হেয়ার স্ট্রিট থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ইমেল পাঠিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস৷ তার প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সকালেই কল্যাণ জানিয়েছিলেন, তিনিও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করবেন৷ সন্ধে গড়ানোর আগেই হেয়ার স্ট্রিট থানায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৫টি ধারা অনুযায়ী সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে আবেদন জানালেন আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ উল্লেখযোগ্যভাবে চিঠিতে ‘রাজ্যপাল’ পদের উল্লেখ করা হয়নি৷
advertisement
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা আবেদনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬১, ১৫২, ১৯২, ১৯৬ এবং ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ আনা হয়েছে বোসের বিরুদ্ধে৷
কল্যাণ বলেন, ‘‘সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। যিনি বর্তমানে রাজভবনে বসবাস করেন। উনি ইচ্ছা করে নানা অভিযোগ এনেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো অভিযোগ করেছেন।
মানুষকে উনি পুলিশের বিরুদ্ধে খ্যাপাচ্ছেন।’’
সাংসদের কথায়, ‘‘রাজ্যপালের ইমিউনিটি আছে। সেটা আইনগত কাজ করার জন্য। আমি ওনার বেআইনি কাজের জন্য অভিযোগ করেছি। আমার ওপর রাগ কেন? কারণ ও কাছের ছেলেমেয়েদের উপাচার্য করতে চেয়েছিল। আমি সেটা মামলা করে আটকেছি। ওর রাগ সেটাই আমার ওপর৷’’
রাজভবনে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত থাকার অভিযোগ তুলে তৃণমূল সংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ক’দিন আগে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন৷ সেই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল রাজভবনের তরফে।
কল্যাণের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি গুরুতর ও জামিন অযোগ্য বলেও রাজ ভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় ই মেল করে এই অভিযোগ জানানো হয়েছিল রাজভবনের তরফে।
সেখানে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের যে সব ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেগুলি হল ১৫১ ও ১৫২,১৯৭, ১৯৬ এ,১৯৬ বি, ৩৫৩ -১ বি ও ৩৫৩ সি, ৩৫৩-২। রাজ ভবনের পক্ষ থেকে ই-মেল করা অভিযোগে ধারাগুলি উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত দেশের ঐক্য, সংহতি এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত, মানুষকে ভুল বোঝানো এবং হিংসা ছড়ানো সহ একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের কাছে।
আরও পড়ুন: ‘মা-কে খুন করে দিত, ভারত না থাকলে…,’ মোদির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ শেখ হাসিনার ছেলের
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী, শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে যে অপরাধের অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ডের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ ভবনের পক্ষে জারি করা বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে।
তারপরই বুধবার সকালে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনিও পাল্টা অভিযোগ আনবেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে৷ রাজভবনের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব ধারায় মামলা করা হয়েছে সেগুলি কোনওটাই প্রযোজ্য নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন আইনজীবী কল্যাণ। সেইসঙ্গে বোসের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতা-সহ রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতা, রাজ্যের বিরুদ্ধে ‘উস্কানিমূলক মন্তব্য’, ‘ভাগাভাগির রাজনীতি’ করার মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
