সূত্রের খবর, বাবুলের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণার পরই তাঁকে ফোন করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। বাবুলকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে। সেখানে নাড্ডার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। বিজেপি সূত্রের খবর, নাড্ডার কাছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন বাবুল। শুধু তাই নয়, তাঁর মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া নিয়েও ক্ষোভ দেখান বাবুল।
advertisement
বিজেপির আরেকটি সূত্র বলছে, বাবুলের সঙ্গে কথা বলেছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনিও বাবুলকে বুঝিয়েছেন, দল না ছাড়তে। দলীয় সংগঠনে বাবুলকে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু বাবুলের প্রতিক্রিয়া এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। বিজেপির একটা অংশ বলছে, বাবুল সুপ্রিয় বনাম দিলীপ ঘোষের লড়াই বঙ্গ বিজেপি শিবিরের কারও অজানা নয়। শনিবার ফেসবুকে বাবুল সুপ্রিয় রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়ার ঘোষণা করার পরে দিলীপের বক্তব্য সেই সত্যিটাই ফের সামনে এনে দিয়েছে। বাবুলের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণাকে রীতিমতো কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, 'মাসির গোঁফ হলে মাসি বলব না মেসো বলব তা ঠিক করব। আগে তো মাসির গোঁফ হোক।' দিলীপের সেই মন্তব্যের পাল্টা ফেসবুকেই দিয়েছেন বাবুল। শনিবার গভীর রাতে বাবুল লিখেছেন, 'এই ধরণের ব্যক্তিত্ব বা মন্তব্যের সঙ্গে তো আর রোজ রোজ ডিল করতে হবে না। কত পজিটিভ এনার্জি বাঁচবে বলুন তো যেটা অন্য সৎ কাজে লাগাতে পারবো। নিচে দুটো টাটকা উদাহরণ দিলাম... প্রথম উক্তিটির সৌজন্য শ্রী কুনাল ঘোষ আর দ্বিতীয়টির, শ্রীমান দিলীপ ঘোষ।' বিজেপি সূত্রে খবর, অনেকদিন ধরে মনে ক্ষোভ জমছিল বাবুলের৷ আর তার নেপথ্যে রয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
দিলীপ ঘোষকে 'শ্রীমান' বলে উল্লেখ করে বাবুল ফেসবুকে লিখেছে, 'কারণ বাবুল লিখেছেন, ‘কোনও সৈন্য–সামন্ত, সরকারি টাকায় সিকিউরিটি থাকবে না| ভোটের রাজনীতিতে না থাকলে কারও স্বার্থে তো ঘা লাগবে না তাই (হয়তো) আমার কাজও কেউ রাজনৈতিক কারণে আটকাবেনা| যে যার নিজের মতো করে দেখেছেন, বুঝেছেন, সমর্থন করেছেন, তীব্র বিরোধিতা করেছেন, প্রশ্ন করেছেন, কৈফিয়ত চেয়েছেন, কিছু মানুষ নিজেদের রুচি অনুযায়ী ভাষার' ব্যবহার করেছেন—সবটাই শিরোধার্য। কিন্তু আপনাদের প্রশ্নের জবাব আমি কাজেও তো দিতে পারি| তার জন্য মন্ত্রী বা সাংসদ থাকার কি দরকার|’'
এমন পরিস্থিতিতে বাবুলের তৃণমূল-সংযোগ নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। সৌগত রায়ের মতো বর্ষীয়াণ তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে কথাও হয়েছে বাবুলের। সৌগত অনুরোধ করেছেন বাবুল যেন রাজনীতি না ছাড়েন। কিন্তু বাবুল কী করবেন, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও গুঞ্জন থেমে থাকছে না।
