স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মনোতোষের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র৷ বাবা শান্তিনাথ ঘোষের একটি চায়ের দোকান রয়েছে৷ সেই দোকানই তাঁদের সংসারের আয়ের উৎস৷ মাটির বাড়িতেই বসবাস৷ এদিন ছেলের কথা বলতে গিয়েও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বাবা৷ বলেন, ‘‘ঠান্ডা ছেলে৷ বয়েস স্কুলে নাম আছে৷ পরীক্ষা দিয়ে চান্স পেয়েছে৷’’ এরপরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শান্তিনাথ৷ বারবার বলতে থাকলেন, ‘‘আমার জীবনের কষ্ট চলে গেল…আমার ছেলে দোষী নয়৷ আমি বারবার বলি আমার ছেলে দোষী নয়৷’’
advertisement
আরও পড়ুন: ‘সিনিয়রদের জন্য গাঁজা বানাতে হত’, সহপাঠীর চ্যাটে র্যাগিংয়ের প্রমাণ!
মনোতোষের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, দু-তিন মাস অন্তর বাড়ি ফিরত সে৷ বাড়ি ফিরে পাড়ার ক্লাবেও যেত৷ অন্যদের সঙ্গে ক্যারাম খেলত, আড্ডা মারত৷ এমনকি, পাড়ার কারও কোনও সমস্যা হলে ঝাঁপিয়ে পড়ত৷ কিন্তু, সেই ছেলেই কী করে এমন একটা ঘটনায় গ্রেফতার হল সেই কথাটাই বিশ্বাস করে উঠছে পারছেন না পাড়া প্রতিবেশী থেকে পরিবারের সদস্যেরা৷
শুক্রবারই যাদবপুর কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে৷ শনিবার তাঁকে আদালতেও তোলা হয়৷ তারপর শনিবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে গ্রেফতার করা হয় যাদবপুরের আরও দুই বর্তমান ছাত্রকে৷ ধৃতদের নাম মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত। ধৃত দীপশেখর বাঁকুড়ার বাসিন্দা। বয়স ১৯ বছর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মনোতোষ হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা। বয়স ২০ বছর। তিনি সমাজবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। হস্টেলের ১০৪ নম্বর ঘরে থাকেন তিনি। মনোতোষের অতিথি হিসাবেই হস্টেলে রাখা হয়েছিল স্বপ্নদীপকে। সৌরভ চৌধুরীই নাকি সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন৷
আরও পড়ুন: সম্ভবত যৌন সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হয়েছিল! চাঞ্চল্যকর দাবি স্বপ্নদীপের সহপাঠীর
সূত্রের খবর, এই দুই ছাত্রের গ্রেফতারির পরে, তাঁদের বয়ান থেকে উঠে আসছে আরেক জন চতুর্থ ব্যক্তির নামও৷ শোনা যাচ্ছে, এই চতুর্থ জনই নাকি ছিলেন ‘পালের গোদা’৷ ঘটনার সময় এই ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিল৷ দ্বিতীয় ইন্ট্রো চলাকালীন এই চতুর্থ ব্যক্তির নির্দেশেই বিষয়টি আরও ভীতিকর আকার ধারণ করেছিল৷ এমনকি, সৌরভের থেকেও তাঁর ভূমিকা বেশি ছিল বলে জানা গিয়েছে৷
এখনও পর্যন্ত তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার সময় এই চার জন ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷ সে কথা অন্য আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গিয়েছে৷ কিন্তু, মৃত ছাত্র কী ভাবে ছাদে পৌঁছল এবং তারপরে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল, সেই বিষয়ে একেক জন একেক রকম কথা বলছেন বলে সূত্রের খবর৷