কখনও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম তাপস রায়, আবার কখনও সাংসদ অর্জুন সিং বনাম বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম৷ সম্প্রতি তৃণমূল নেতাদের মধ্যে একে অন্যকে প্রকাশ্যেই আক্রমণ করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে৷ সামনে চলে এসেছে দলের ভিতরের নবীন প্রবীণ বিতর্ক৷ দল ঐক্যবদ্ধ আছে বলে বার বার বার্তা দিয়েও এই নেতাদের নিজেদের এই কথার লড়াই বন্ধ করা যাচ্ছে না৷
advertisement
আরও পড়ুন: যে কোনও শর্তে বাড়ি ফিরতে রাজি ছিলেন, নতুন বছরেও ইচ্ছেপূরণ হল না পার্থর
এ দিন দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব। দলে সমস্যা থাকলে। দলের পার্টি অফিস আছে। সুব্রত বক্সী আছেন, অভিষেক বন্দোপাধ্যায় আছেন। তাঁদের সাথে কথা বলুন। দয়া করে বিবৃতির লড়াইয়ে যাবেন না। দল এখন একটা বড় লড়াইয়ে নামছে। সুতরাং আমাদের সকলকে একসাথে সেই লড়াই লড়তে হবে।’
এই প্রসঙ্গেই দলের নেতাদের তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্যাগের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা৷ ফিরহাদ বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক ত্যাগ অনেক লড়াইয়ে আজ আমরা এই জায়গায় এসেছি। আমাদের আরও বড় লড়াইয়ে যেতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সারা জীবনের ত্যাগ দল গঠনের পিছনে। সেটাকে নষ্ট করবেন না। আমরা ছোট বড় সবাই একসাথে লড়াই করব। কারণ আমাদের সবার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের সমস্যা থাকলে আমরা সংবাদমাধ্যমে না বলে দলের অন্দরে বলব।’
শাসক দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কড়া একটি মন্তব্যে আপত্তি তোলেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ একই ভাবে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানেই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন দলের আর এক সিনিয়র নেতা তাপস রায়৷ একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরের বিবাদ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাচ্ছে বিরোধীরা৷
শেষ পর্যন্ত অবশ্য গতকালই কুণাল ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতো দলের একাধিক নেতা দাবি করেন, তৃণমূলের অন্দরে কোনও বিবাদ নেই৷ তৃণমূল মমতাই শেষ কথা এবং অভিষেক সেনাপতি, এমন বিবৃতি দিয়েও দলের ঐক্যের সুর তুলে ধরার চেষ্টা করেন দলের শীর্ষ স্তরের নেতারা৷ এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দলের নেতাদের মুখে কুলুপ দিতে আর্জি জানালেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ৷ কাজের কাজ কতটা হয়, সেটাই দেখার৷ কারণ এ দিনও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন তাপস রায়, আবার পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে অর্জুন সিংকে আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষ৷