কাঠ, দরমা দিয়ে তৈরি ঘর গুলোর মাথার উপর ছিল টিনের ছাউনি। বেশির ভাগই ছিল দোকান। এর মধ্যে আবার কয়েকটি কাঠের আসবাবপত্র, খাবারের দোকানও ছিল। কিন্তু তার মধ্যেও বসবাস করতো কয়েকটি পরিবার। ফলে মজুদ ছিল রান্নার গ্যাস সিলেন্ডার। ফলে মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আহত হয়েছেন দমকল কর্মী সহ কয়েক জন বাসিন্দা। প্রশাসনের হিসেব বলছে তিরিশটির ওপর দোকান সম্পূর্ণরূপে ভষ্মিভূত হয়ে গেছে। একই সঙ্গে সর্বস্বান্ত হয়েছে পাঁচ ছ'টি পরিবার।
advertisement
ওইখানেই বাস করতেন দেবনাথ পরিবার। দরমার বাড়ির সামনের অংশটুকু ছিল তাদের দোকান। দুই মেয়েকে নিয়ে এখন পথে বসেছেন কেয়া দেবনাথ। তিনি বলেন, 'আমাদের আর কিছু নেই। সব শেষ হয়ে গেছে। মেয়েদের বিয়ের জন্য কিছু গয়না বানিয়েছিলাম। সেগুলো আলমারির ভেতর ছিলো। সেগুলো পর্যন্ত গলে গেছে।'
মসলন্দপুর এর গোপাল শীল কুড়ি বছর ধরে অন্যের সেলুনে কাজ করে অর্থ জমিয়ে নিজে সেলুন খুলেছিলেন শতরূপা পল্লীতে। করোনার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সপ্তাহ তিনেক আগে সেলুন আবার চালু করেন। সেখানেই রাতেও থাকতেন। কিন্তু মায়ের শরীর খারাপ হওয়ায় শনিবার বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। রাত তিনটার সময় খবর পান আগুন লাগার। সকালে এসে দেখেন কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। গোপাল বাবু বলেন, 'লকডাউনে আধমরা হয়ে গেছিলাম। এবার সবটাই চলে গেল।'
সকাল থেকেই প্রশাসন থেকে সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষ গুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সব সাহায্য আসা শুরু হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও পৌঁছেছে। কিন্তু নিশা বিশ্বাসের হারমোনিয়াম কি আর ফিরে আসবে? দর্মা আর কাঠ দিয়ে তৈরি বাড়ি পুড়ে কাঠ কয়লা হয়ে গেছে। তার ওপর দাঁড়িয়ে নিশা বলে, 'ক্লাব থেকে পুড়ে যাওয়া বইয়ের ব্যবস্থা করে দেবে বলেছে। কিন্তু আবার ঘর বানিয়ে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র করতে হবে। তারপর বাবা আর কী করে হারমোনিয়াম কিনে দেবে?'