নরেন্দ্র মোদি সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা থেকে নাম বাদ পড়েছে ৭ বছরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo)। আর সেই মন্ত্রিত্ব হারানোর দিন থেকেই তিনি 'অন্য' বাবুল। একের পর এক ফেসবুক পোস্ট করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বাবুল, আর তা দলের অন্দরেই। মন্ত্রিত্ব হারানোর পরই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সংঘাত বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। মন্ত্রিত্ব হারিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতির থেকে গান নিয়ে বেশি 'মন' দিয়েছিলেন আসানসোলের সাংসদ। কিন্তু তাতেও মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়ছিল মন্ত্রিত্ব হারানোর হতাশা।
advertisement
এরই মধ্যে তিনি লিখেছেন, 'আমার মনের কোণের বাইরে" কারোকে আমার মনের হদিশ তো দিইনি আমি - দেবোও না। তাহলে তা নিয়ে এতো কথা কেন।' মন্ত্রিত্ব হারানোর পরপরই ফেসবুকে বাবুল লিখে ফেলেছিলেন, 'যেখানে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, সেখানে কিছুটা আগুন তো থাকবেই। যাঁরা আমাকে ভালোবাসেন, সেই বন্ধু, মিডিয়ার ফোন আমি ধরতে পারছি না। হ্যাঁ, আমি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছি। আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।' পরে অবশ্য নিজের লেখাই আবার ‘শুধরে’ নিতে হয় বাবুলকে। লেখেন, ‘ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল কথাটা হয়ত এভাবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’
বাবুলের শেষ পোস্ট...
অবশ্য সকলেই বলছিলেন, মন্তব্যের পুনরায় ব্যাখ্যা করলেও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর লেখায় যে কিছুটা অভিমান মেশানো ছিল, তা ওই দিন স্পষ্ট হয়ে যায়। এরই মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ও মুকুল রায়কে ট্যুইটারে ফলো করা শুরু করেন আসানসোলের সাংসদ। বাবুলের মন্ত্রিত্ব 'কাড়া' নিয়ে এদিকে নবান্নে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশানা করেন করেন নরেন্দ্র মোদিদের। সব দেখেশুনে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ ছোড়েন, 'বাবুল সক্রিয় মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী থাকাকালীন তো মুখ্যমন্ত্রী ওনাকে কম গালমন্দ করেননি। এখন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বাবুল।’ পাল্টা দিতে দেরি করেননি বাবুলও। 'আমার "হাঁফ ছেড়ে বাঁচাতে" দিলীপদা আনন্দ পেয়েছেন এতেই আমি আনন্দিত !' লেখায় যে বাবুলের শ্লেষ মিশে ছিল, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও।
আসলে ক্রমেই বাবুলের তৃণমূল-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে গুঞ্জন বাড়তে শুরু করেছে। রাজ্য রাজনীতিতে বাবুল ফুল বদল নিয়েও গুঞ্জন, 'গুজব' থেমে নেই। আর এমনই এক মোক্ষম সময়ে ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না এক সময় মোদির আস্থাভাজন বলে পরিচিত বাবুল সুপ্রিয়কে। এই অন্তরাল কাটিয়ে কি কোনও 'বিস্ফোরণ' ঘটাবেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ, প্রহর গুনছে বাংলার রাজনৈতিক মহল।
