স্বারকলিপিতে বলা হয়েছে, '২০১৭ সালের ১৩ অগাস্ট দুর্গাপুর নগর নিগমের সর্বশেষ নির্বাচন সংগঠিত হয়েছিল। এই নির্বাচনে এক হাড়হিম করা সন্ত্রাসের মুখোমুখি হতে হয়েছিল দুর্গাপুরবাসীকে। ভোট লুট হয়েছে যথেচ্ছ। দুর্গাপুর শহরকে প্রায় ঘিরে রাখার মধ্যে দিয়ে শহরবাসীর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমা অতিক্রম হয়ে গেলেও পুরো নির্বাচন না করিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে রাজ্য সরকারের ৫ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর মাধ্যমে দুর্গাপুর নগর নিগমের কাজ পরিচালনা করছে। প্রায় নয় মাস অতিক্রান্ত হয়েছে বিগত পুরো নির্বাচনের সময়সীমা।"
advertisement
আরও পড়ুনঃ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফের তোলপাড় নেটদুনিয়া, কী বললেন কুণাল ঘোষ? শোরগোল জয়নগরে
স্বারকলিপিতে উল্লিখিত, "বৃহৎ এই নগরনিগমে নির্বাচিত বোর্ড না থাকায় সাধারণ মানুষের সার্টিফিকেট পাওয়া সহ আরো বেশ কিছু পরিষেবার পেতে সমস্যা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরের প্রায় পঞ্চাশ হাজার নাগরিক দ্রুত স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিতে স্বাক্ষর করেছেন যা মাননীয় রাজ্যপালের কাছে ফ্যাক্স এবং ইমেইল এর মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এবং দুর্গাপুরবাসীর স্বাক্ষর এর কাগজ কমিশনের কাছেও জমা করা হয়েছে। কমিশনের কাছে দুর্গাপুরবাসীর পক্ষ থেকে দ্রুত স্বচ্ছ পুরসভা নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানাচ্ছি। তার সঙ্গে দুর্গাপুরের সমস্ত নাগরিকদের ভোটাধিকার যেন বিগত পুরো ভোটের মতো লুট না হয় তারও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হচ্ছে।"
আরও পড়ুনঃ আছড়ে পড়ল কালবৈশাখী! শুরুর আগেই উল্টে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচির তাঁবু
এ প্রসঙ্গে পলাশ দাস বলেন, "নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়েই আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছি। সেটা হল দুর্গাপুর পুরসভা নির্বাচন। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে এর মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়েছে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ওখানে পাঁচজনের একটি বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বসানো হয়েছে যা নির্বাচিত নয়। নির্বাচনের কোনও নামগন্ধ নেই। ওখানে আমাদের পার্টি জনগণের কাছে যায়। যে দৈনন্দিন জীবনে পুরসভা যেভাবে জড়িয়ে আছে মানুষের নানা ধরনের কাজ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। এই অবস্থায় ৫০ হাজার মানুষ তাঁরা স্বাক্ষর দিয়েছেন। তাতে দুর্গাপুরের মানুষ যেন তাঁদের নির্বাচিত পুরসভা পেতে পারে।"
পলাশ দাস আরও বলেন, " আমরা এই দাবি নিয়েই কমিশনের কাছে যাই যে একদিকে দ্রুত নির্বাচন করতে হবে আর নির্বাচনের অতীতের যে অভিজ্ঞতা সেই অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি এতে না হয়। একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মানুষ যেন উপহার পায়। যদিও নির্বাচন কমিশন কিছু জানাতে পারল না। এখন এই আমলে শুধু বাহানা বা ছুতো প্রয়োজন হয় যা দিয়ে তারা নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারে। আমাদের আমলে মূল লক্ষ্য ছিল মানুষ যাতে নির্বাচিত বোর্ড পায়। এখন ওদের লক্ষ্য হাতের মুঠোয় রাখার জন্য জনগণকে বাদ দিয়ে নিজেদের লোককে বসিয়ে দেওয়া। সবাই দেখতে পাচ্ছেন কি পরিমান চুরি হচ্ছে। বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত বা পুরসভা অথবা বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধীনে পঞ্চায়েত বা পৌরসভা। এগুলো যদি করা যায় তাহলে লুটপাট করাটা অনেক সুবিধাজনক হবে। এটাই হচ্ছে অতীতের সঙ্গে আজকের পার্থক্য। আগে নির্বাচন কমিশন বলতে পারত যে পাঁচ বছর শেষ হচ্ছে আমি এই মাসে ভোট করব। এখন অসহায় নির্বাচন কমিশন। তিনি জানেন না রাজ্য সরকার আদৌ ভোট করবে কিনা। করলে কত বছর বাদে করবে। আড়াই বছর তিন বছর চার বছর ধরে পড়ে থাকে এ ধরনের উদাহরণ এই রাজ্যে তৈরি হয়েছে। তো কবে হবে? কি হবে? বলতে পারছেন না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এটা হবে নাকি পরে হবে সেটাও না।"
UJJAL ROY