চিরাচরিত দুর্গা প্রতিমার ছকে বাধা ফর্ম ভেঙেছিলেন গোপেশ্বর পাল। পানপাতা মুখে এনেছিলেন রিয়ালিজম। পদ্মকলি হাত বদলে গেছিল পেশির লাবণ্যে। চন্দননগর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ। প্রতিমার (Durga Puja 2021) বাঙালিয়ানাকে বদলে দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিকতায়। এথেনার স্পর্ধা আর আফ্রোদিতির সৌন্দর্যকে মিলিয়ে দিয়েছিলেন উমার লালিত্যে।
কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণিতে জন্ম আর বেড়ে ওঠা। সেখানেই তৈরি জাদুকরের হাত। হাতেখড়ি মামা সতীশচন্দ্র পালের কাছে। ছোটলাট কারমাইকেলকে নিজের তৈরি দুর্গামূর্তি (Durga Puja 2021) উপহার দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন। গোপেশ্বরের বয়স তখন মাত্র একুশ-বাইশ। তিরিশেই ইংল্যান্ড পাড়ি। গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ পারসি ব্রাউনের সুুপারিশে। সেখানেই রোমান স্কাল্পচারের শিক্ষা।
advertisement
মিরাকেলও করেছেন। ১৯৩৮-এ কুমারটুলি সর্বজনীনের প্রতিমা পুড়ে যাওয়ায়, ২৪ঘন্টার মধ্যে বানিয়েছিলেন প্রতিমা। একচালার বদলে পাঁচচালা। সেবার সুভাষচন্দ্র ছিলেন কুমারটুলির সভাপতি।
শুধু দুর্গা (Durga Puja 2021) বা কালী প্রতিমা নয়। গোপেশ্বর নিজেেক দক্ষ করেন স্কাল্পচারে। তার তৈরি রামকৃষ্ণ এখন বেলুড় মঠে। এছাড়াও আশুতোষ মুখার্জি, স্যার রমেশ চন্দ্র মিত্র, শিশির কুমার ঘোষ, সম্রাট পঞ্চম জর্জের মূর্তি বানিয়েছিলেন তিনি।
১৯৪৫ সালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে মারা যান। গোপেশ্বরের স্টুডিওর দায়িত্ব নেন ভাইপো মনিলাল। যাকে নিজেই শিখিয়েছিলেন স্কাল্পচারের খুঁটিনাটি। ছেলে সিদ্ধেশ্বর তখন ছোট। দাদা মনিলালের কাছেই তারও শিক্ষা। এখন সিদ্ধেশ্বর বাবুর স্ত্রী যমুনা পাল এবং শ্যালক ব্যোমকেশ পাল গোপেশ্বর বাবুর সেই স্টুডিওর দায়িত্বে। খুশি সরকারের সিদ্ধান্তে। ব্যোমকেশ বাবুর ছেলে অভিজিত পাল আর্ট কলেজের ছাত্র। তৈরি হচ্ছে গোপেশ্বরের উত্তরসুরী।