মস্তিষ্কের জটিল রোগে আক্রান্ত যুধাজিৎ। সারাজীবন চলবে তার চিকিৎসা। তবে এরই মধ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যুধাজিতের শরীরে দেখা গেল আরও এক আজব অসুখ। চিবোতে পারে না বলে, সবসময় গলা বা তরল খাবার খাওয়াতে হয় তাকে। এরই মধ্যে বার বার কাশি, জ্বর- শ্বাসকষ্ট। তা এতটাই বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছিল। এমন কি, দু’ বার তাঁকে রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। মৃত্যুর হাত থেকে তাকে ফিরিয়ে আনেন চিকিৎসকরা। এর পরই শুরু হয় তদন্ত।
advertisement
আরও পড়ুন: কুন্তল ও সায়নীর সম্পর্ক কী? কীভাবে যোগাযোগ? যুবনেত্রীর কাছে একাধিক প্রশ্ন ইডির
কেন বারবার নিউমোনিয়া? দেখা যায়, যে নিউমোনিয়া বার বার বাসা বাঁধছে শরীরে তা আদতে অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া। মুখ দিয়ে যে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে তারই কণা ঢুকে পড়ছে ফুসফুসে। বন্ধ করা হল মুখ দিয়ে খাওয়ানো। নাক দিয়ে ক্ষুদ্রাস্ত্র পর্যন্ত পরিয়ে দেওয়া হল একটি নল। যার নাম জেজুনাল টিউব। তার মাধ্যমেই চলল তরল খাবার খাওয়ানো। তবে এটা চিরস্থায়ী সমাধান নয়। স্বাভাবিক অবস্থায় রোগীকে ফিরিয়ে আনতে কোমর বাঁধলেন চিকিৎসকরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষাতে চিকিৎসকরা দেখলেন, খাবারের কণা ফুসফুসে উঠে আসার কারণ ‘রিফ্লাক্স’। অর্থাৎ যা-ই খাওয়ানো হয় তার কিছুটা ওপরে উঠে আসছে।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, বুঝতে পারা গেল সমস্যাটা আদতে পাকস্থলী আর খাদ্যনালির সংযোগস্থলে। এর সমাধান একটি জটিল অস্ত্রোপচার। যার পোশাকি নাম গ্যাস্ট্রোস্টমি প্লাস ফান্ডোপ্লিকেশন। অস্ত্রোপচারে পাকস্থলী আর খাদ্যনালির সংযোগস্থলটি বেঁধে টাইট করে দেওয়া হয়েছে। এতে খাবারের কণা আর উপরের দিকে উঠতে পারে না। আর পেটের উপর থেকে চামড়া ফুটো করে পাকস্থলীর মধ্যে একটি নল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। যেটা নিয়ে তরল খাদ্য সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছয়।
ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে প্রথম এমন জটিল অস্ত্রোপচার হল ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে। ছ’ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি। এ ছাড়াও তাঁর সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক তপনজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক আনন্দ ও চিকিৎসক কবিতা দুবে।