এর আগে শুনানিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-এর বৈষম্য নিয়ে এদিন প্রশ্ন তুলেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি। তার মতে, ‘বৈষম্য করা মানে মৌলিক অধিকার খর্ব।’ সেই প্রশ্নের উত্তরে হলফনামা জমা করে রাজ্য সরকার জানায় কেন্দ্রের হারে রাজ্যের পক্ষে ডিএ দেওয়া সম্ভবপর নয় ৷
রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে আদালতে জোর সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন, মহার্ঘ ভাতায় সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। কারণ, দিল্লি এবং চেন্নাইতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যে হারে ডিএ পাচ্ছে, রাজ্যে ফিরে এলেই কি ডিএ’র হার কমে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে কোনও জবাব দেননি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ৷
advertisement
আরও পড়ুন
সমপ্রেম সম্পর্ককে স্বীকার করুন, ৩৭৭ ধারা নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের
সরকারি কর্মীদের কেন ডিএ অর্থাৎ মহার্ঘভাতা পাওয়া উচিত তার স্বপক্ষে একাধিক আইনি যুক্তি আদালতের সামনে রাখেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। কেন ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার, তার স্বপক্ষে তিনি বলেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে সংবিধানের ৩০৯ ধারা অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রিভিশন অফ পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স আইন তৈরি করে রাজ্য সরকার। এই আইনের মধ্যেই ডিএ-র অধিকারের কথা নিহিত । তিনি একইসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, তবে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতাকে কেন আইনি অধিকার বলব না?
আরও পড়ুন
মেধাতালিকা প্রকাশের পরও কাটল না জট, ফের মামলার ফাঁসে শিক্ষক নিয়োগ
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের এই আইনি যুক্তি শোনার পরই বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চ ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকার এতে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন ৷ একইসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, কিভাবে স্যাট এই যুক্তিগুলি খতিয়ে না দেখেই কিসের ভিত্তিতে স্যাট জানাল, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার নয়? মামলার পরবর্তী শুনানিতে এই সংক্রান্ত আরও আইনি যুক্তি আইনজীবীরা আদালতের সামনে পেশ করবেন।
প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এই মামলা৷ জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডে.এ মেটানোর দাবিতে কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় গত নভেম্বরে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের মামলা দায়ের করলে তাদের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ডিএ দেওয়া সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে ৷ ট্রাইব্যুনালের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন মলয় মুখোপাধ্যায়৷
‘ডিএ কর্মীদের অধিকার নয়’, স্যাটের এই নির্দেশে ক্ষুব্ধ আদালত ৷ অ্যাডভোকেট জেনারেলর আপত্তি উড়িয়ে মামলা গ্রহণ করা হয় ৷ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলা নিয়ে স্যাট-এর নির্দেশকে তুলোধনা করে ডিভিশন বেঞ্চ ৷
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৫ শতাংশ হারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ঘোষণার পর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সেই বেতন ফারাক কমে ৩৯ শতাংশে এসে দাঁড়ায় ৷কিন্তু গত ৭ মার্চ আরও দুই শতাংশ হারে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র ৷ ফের ফারাক বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ শতাংশে ৷