মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই ইউনিটের অর্থসংস্থান রাজ্যসভার সাংসদদের অনুদান এবং বিদ্যুৎ দফতরের সিএসআর তহবিল থেকে করা হয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদদের ৬০ কোটি টাকা এবং সিএসআর মিলিয়ে মোট ৮৪ কোটি টাকায় এই প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। আগেও আমরা একাধিক অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছি, এবার আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হল।”
advertisement
তাঁর কথায়, “এটা সাধারণ মোবাইল ইউনিট নয় — এটা একেবারে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ক্লিনিক। ইসিজি, ব্লাড টেস্ট, আল্ট্রাসাউন্ড-সহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা থাকবে। শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা এতে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। সিরিয়াস রোগীকেও এখানে আনা সম্ভব হবে।”
মমতা আরও জানান, পাহাড়, জঙ্গলমহল ও সুন্দরবনের মতো দুর্গম এলাকায় এই ইউনিট পাঠানো হবে। যেখানে যেখানে গাড়ি যাবে, আগাম জানিয়ে দেওয়া হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। প্রতি মাসে প্রায় ২ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে এই পরিষেবা চালাতে, কিন্তু মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। এ ছাড়াও, মমতা বলেন, “পিজি’তে কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্ক করা হোক। মেডিক্যাল কলেজে আগে করেছি। সেটা কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না? নিশ্চিত কারও অবহেলা আছে। আশা করব দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এটা দেখবেন।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যসাথীতে আট কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ উপকার পেয়েছেন। তাঁর কথায়, “জেনেরিক মেডিসিন আমরা প্রথম চালু করেছি। স্বাস্থ্যসাথীতে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। স্বাস্থ্যই জীবনের সব থেকে বড় সম্পদ। আগে নাড়ি দেখে ডাক্তার ওষুধ দেখত। এখন তো সবেতেই স্পেশালিটি। সরকারি হাসপাতালে অনেক সুবিধা। বেসরকারি হাসপাতালে অনেক খরচ। অনেকে আবার আছে স্বাস্থ্যসাথীতে চিকিৎসা করতে চায় না। এর তাহলে লাইসেন্স রাখার দরকার নেই।”
মমতা আরও বলেন, “আমি এই ব্যাপারে রাফ অ্যান্ড টাফ। কারও সাথে অন্যায় হোক আমি চাই না। কিন্তু একটা অভিযোগ কিছুদিন আগেই এসেছিল আমাদের কাছে, বারাসাত এলাকা থেকে, ২ লক্ষ টাকা স্বাস্থ্যসাথী রেখে বাকি টাকা ক্যাশে দিতে বলেছিল। আমি স্বাস্থ্য সচিবকে সঙ্গে সঙ্গে বলেছি।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে উল্টোপাল্টা লেখে। এদের কাউন্টার করতে নারায়ণ তোমার লোক রাখা উচিত। বেশি কথায় নয়, অল্প কথায়, চার লাইনে জবাব দিতে হবে।”
তাঁর মন্তব্য, “এরা আবার অন্যের নাগরিকত্ব জানতে চায়। দিল্লির বস্তিকে এরা বলে নিউটাউনের বস্তি! সব কিছু ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। সারাদিন নেগেটিভ ন্যারেটিভ চালায়।”
স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সমালোচকদের কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা চোখের ছানি অপারেশনে এক লক্ষ টাকা নেন, তারা জেনে রাখুন — আমরা ইতিমধ্যেই ২৬ লক্ষ বিনামূল্যে অপারেশন করেছি, ৩৪ লক্ষ চশমা বিতরণ করেছি। খালি ব্রেন ড্যামেজ না করে, ব্রেনকে ম্যানেজ করুন।”