এ দিন কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভার অন্তর্গত মাথাভাঙার জোড়পাটকিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ৷ আহত হন বেশ কয়েকজন৷ ঘটনার পরই সিআইএসএফ-এর তরফে ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ে কমিশনে৷ সেখানে দাবি করা হয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ন'টা নাগাদ শীতলকুচি বিধানসভার ১২৬ নম্বর বূুথে পৌঁছয় সিআইএসএফ-এর একটি ক্যুইক রেসপন্স টিম৷ স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই এলাকায় টহল দিচ্ছিল দলটি৷ অভিযোগ, সেই সময় ৫০-৬০ জনের একটি দুষ্কৃতী দল এলাকার ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিচ্ছিল৷ সিআইএসএফ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা বাধা দেয় বলে অভিযোগ৷ এই গন্ডগোলের মধ্যেই একটি শিশু পড়ে যায়৷ এর পরেই ওই দুষ্কৃতী দলটি ক্যুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের উপর চড়াও হয়৷ আত্মরক্ষায় এবং ভিড় সরিয়ে দিতে ৬ রাউন্ড গুলি চালায় বাহিনী৷ এর পরেই সিআইএসএফ-এর এক কম্যান্ড্যান্ট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করেন৷
advertisement
সিআইএসএফ-এর রিপোর্টে দাবি, এর প্রায় এক ঘণ্টা পরে প্রায় দেড়শো জন মানুষ একসঙ্গে ১২৬ নম্বর বুথে চড়াও হয়৷ প্রথমে বুথের দায়িত্বে থাকা হোমগার্ড এবং আশা কর্মীদের হেনস্থা করার পরে তারা বুথের ভিতরে ঢুকে অন্যান্য ভোটকর্মীদের মারধর করতে শুরু করে বলে অভিযোগ৷ বাধা দিতে গেলে কয়েকজন দুষ্কৃতী সিআইএসএফ জওয়ানদের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ৷ সিআইএসএফ-এর দাবি, সতর্ক করতে প্রথমে শূন্যে ২ রাউন্ড গুলি চালান সিআইএসএফ জওয়ানরা৷ কিন্তু তাতেও বুথ ছাড়েনি দুষ্কৃতীরা৷ এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ এবং আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ তা সত্ত্বেও দুষ্কৃতীরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের আক্রমণ করতে এগিয়ে আসে বলে অভিযোগ৷ সিআইএসএফ-এর রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পরিস্থিতি এমনই হয়েছিল যে সিআইএসএফ জওয়ানদের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা ছিল৷ তখনই হামলাকারীদের রুখতে ৭ রাউন্ড গুলি চালান সিআইএসএফ জওয়ানরা৷ এর পরেই ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায় ওই বুথে৷
সিআইএসএফ-এর রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনা চলাকালীন আরও পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷ আত্মরক্ষার্থে তারাও কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে৷ সিআইএসএফ-এর রিপোর্টেই অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তাদের বাহিনীর ছোড়া গুলিতে ৫-৬ জন গুরুতর আহত হয় এবং পরে তাদের মৃত্যু হয়েছে৷ কোচবিহারের পুলিশ সুুপারও দাবি করেছেন, সিআইএসএফ জওয়ানদের ঘিরে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করে বেশ কিছু মানুষ৷ বাহিনীর অস্ত্রও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়৷ তার পরই বাধ্য হয়ে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী৷