গত বুধবার ডিএ-র দাবিতে একযোগে বিধানসভা অভিযানে নামে ২৭টি বাম সংগঠন। ধর্মতলা থেকে মিছিল এগোতেই ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বহু সরকারি কর্মী। লাল ঝাণ্ডা হাতে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি করতে দেখা যায় বহু প্রবীণ সরকারি কর্মীকেও। ঘটনার জেরে গ্রেফতার হন ৪৭ জন আন্দোলনকারী।
ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনের সময় সরকারি কর্মীদের এভাবে গ্রেফতার করার ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে নিজের ঘরে ডাক মুখ্যমন্ত্রীর! গেলেন, তবে চমকও দিলেন বিরোধী দলনেতা!
এরপরেই শুক্রবার বিধানসভায় ডিএ নিয়ে সরকারের অবস্থান জানাতে দেখা গেল দুই মন্ত্রীকে। ডিএ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা ডিএ নিয়ে সংবেদনশীল। ডিএ কত বাকি আছে তা ওঁরা বলবেন। আমরা বলব, এটা বিচার্য বিষয়। আমরা আবেদন করব। বিচারপতির মনে হলে তা বাতিল করে দেবেন।"
পাশাপাশি, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলে বিরোধীদের উদ্দেশ্যেও নরম গরম প্রত্যুত্তর দেন চন্দ্রিমা। ডিএ-কে সরকারি কর্মচারীদের 'মৌলিক অধিকার' হিসাবে বারবার উল্লেখ করছেন বিরোধীরা। এ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, "মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি, বিরোধীদের মৌলিক দায়িত্বর বিষয়টিও মনে রাখতে হবে। আমার আবেদন এই ব্যাপারে তারা সচেতন হবেন।"
আরও পড়ুন: বহরমপুরে মহুয়া মৈত্র, নেত্রীকে কাছে পেয়েই ভয়ঙ্কর অভিযোগ নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর!
ডিএ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন মানস ভুঁইয়াও। তিনি বলেন, "ডিএ নিয়ে অবহেলা করা হচ্ছে এমনটা নয়। একটা গেল গেল বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। আমরা ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল অবধি ২৭ হাজার কোটি খরচ করেছি। আমরা দেওয়ার মন দিয়ে দিচ্ছি। সংবেদনশীল মন দিয়ে দিচ্ছি। একবারও কেউ বলছেন না কেন্দ্রীয় সরকার অর্থনৈতিক অবরোধ করছে।"
সেচমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রের কাছ থেকে ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা পায় রাজ্য। অথচ, রাজ্যের সেই হকের পাওনাই কেন্দ্র তাঁদের দিচ্ছে না। নানা অনুষ্ঠানে, এমনকি, বিধানসভার বিবৃতিতেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। এদিন সেই একই সুর শোনা গেল মানস ভুঁইয়ার বক্তব্যেও। মানস বলেন, "যে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে ১০০ দিনের কাজে শ্রেষ্ঠ রাজ্য বলে পুরস্কৃত করে, সেই কেন্দ্রই ১০০ দিনের কাজের ৬৭০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। রাজ্যের গলা টেপা হচ্ছে।"
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, তাহলে কি বর্ধিত হারে মহার্ঘ ভাতা না দিতে পারার সমস্যাও শেষমেশ কেন্দ্রের ঘরেই ঠেলছে রাজ্য?