সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে যুবভারতী সংক্রান্ত একাধিক জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়। মামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ আরও দুই আবেদনকারী। তাঁদের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার দেওয়ার আবেদন জানানো হয় এবং রাজ্যের গঠিত সিটের উপর আস্থা নেই বলেও দাবি তোলা হয়। তবে আদালত সেই দাবিকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি।
advertisement
শুনানি শেষ হওয়ার পর রায়দান কিছুক্ষণের জন্য স্থগিত রাখা হলেও রাতেই আদালত তাদের পর্যবেক্ষণ জানিয়ে দেয়। বেঞ্চ জানায়, কোনও ঘটনার তদন্ত করা পুলিশের সাংবিধানিক অধিকার এবং তদন্তের প্রাথমিক বা মধ্যবর্তী পর্যায়েই সেই তদন্তকে পক্ষপাতদুষ্ট বলা যায় না।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, রাজ্য সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি আইন অনুযায়ী তৈরি হয়েছে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় গেজেট নোটিফিকেশনও জারি করা হয়েছে। আইনের দৃষ্টিতে, এই ধরনের কমিটি গঠনের জন্য বিধানসভায় আলাদা করে প্রস্তাব পাশ করানো বাধ্যতামূলক নয়। এই যুক্তিতেই সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজ করা হয়েছে। আদালত স্পষ্ট জানায়, কেবল অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়া যায় না; তা করা হয় শুধুমাত্র অত্যন্ত বিরল ও ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, রাজ্যের গঠিত সিটই তদন্ত চালিয়ে যাবে এবং এই মুহূর্তে কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে না। যদিও সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ হয়েছে, তবুও রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট আয়োজক সংস্থাকে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, যুবভারতীকাণ্ডের তদন্তে রাজ্য সরকার একটি কমিটি গঠনের পর তার বৈধতা ও ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গত ১৫ ডিসেম্বর কলকাতা হাই কোর্টে দু’টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। আবেদনকারীদের দাবি ছিল, রাজ্যের গঠিত কমিটির পর্যাপ্ত ক্ষমতা নেই এবং তারা নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারবে না। সেই কারণে আদালতের নজরদারিতে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন অথবা সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়। তবে আদালত শেষ পর্যন্ত সেই সব আবেদন খারিজ করে দেয়।
