#কলকাতা: এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের আঁচ এবার যাদবপুরের সমাবর্তনেও। সমাবর্তনের দিন রাজ্যপালকে বয়কটের ডাক দিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন এস এফ আই। সমাবর্তনের দিন কালো ব্যাজ পড়ে এবং কালো পতাকা দেখিয়ে রাজ্যপালকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের কর্মসূচি নিয়েছে তারা। ‘রাজ্যপাল বিজেপি আরএসএস-এর দালালি করছে’, এমনই অভিযোগ তুলে আচার্যকে বয়কটের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশ্য যুক্তি, এই বিষয়ে সরকারিভাবে তাদেরকে কোনও কিছু জানানো হয়নি।
advertisement
সমাবর্তন শুরুর আগেই ফের বিতর্ক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে। আগামী ২৪শে ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সমাবর্তনে আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় উপস্থিত থাকবেন। আর সেই সমাবর্তনের দিনই এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন করবেন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন এসএফআই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমাবর্তনে রাজ্যপালকে বয়কট করা হবে। শুধু তাই নয় এসএফআই আবেদন জানিয়েছে, পড়ুয়াদের যাতে কেউই রাজ্যপালের হাত থেকে শংসাপত্র এবং মেডেল না নেন। এ প্রসঙ্গে এসএফআইয়ের সদস্য উষসী পাল জানিয়েছেন "গত একমাস ধরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বিজেপি আরএসএস-এর দালালি করছেন তা বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে স্পষ্ট। তাই আমরা তাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিগ্রহ করেছিলেন সেই বিষয়েও তিনি চুপ ছিলেন। তিনি এখনও পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানাননি তাই বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ঘিরে গন্ডগোলের আশঙ্কা দেখে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী সপ্তাহে শুরুতেই পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন তারা। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস কলকাতার বাইরে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর সোমবার এই পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাবর্তন কিভাবে নির্বিঘ্নে করা যায় তার পথ খোঁজার চেষ্টা হবে। যদিও এই বিষয় নিয়ে কোন রকম মন্তব্য না করলেও রেজিস্টার স্নেহ মঞ্জু বসু জানিয়েছেন, ‘আমাদের কাছে সরকারিভাবে এখনও এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা কেউ জানায়নি।উপাচার্য বাইরে আছেন তিনি ফিরে এলে আলোচনা করে দেখা হবে।’
গত সপ্তাহের পর থেকেই এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বারবার সরব হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কখনও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেট থেকে শুরু করে মিছিল গিয়েছে গোলপার্ক পর্যন্ত আবার কখনও পড়ুয়ারা অবস্থানে বসে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করেছেন। শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের পড়ুয়াদের নিগ্রহের ঘটনায় কেন রাজ্যপাল ব্যবস্থা নিচ্ছেন না তা নিয়েও সরব হয়েছেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে গেলে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এসএফআই এর তরফে আগামী সপ্তাহে শুরু থেকেই রাজ্যপাল বয়কটের ডাকের কর্মসূচি প্রচার আরও জোরদার করা হবে।