বিবাহ সিনেমার ক্লাইম্যাক্স সিনের পুনরাবৃত্তি দেখা গেল এই কলকাতার বুকেই ৷ বাস্তবে সত্যি সত্যিই হাসপাতাল হয়ে উঠল বিবাহ বাসর ৷ আত্মীয়-স্বজনকে সাক্ষী রেখে হাসপাতালেই অসুস্থ শয্যাশায়ী পাত্রীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন পাত্র ৷
গত বুধবার অর্থাৎ ৮ নভেম্বর নিকাহ স্থির হয়েছিল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ শাহনওয়াজ আলম ও হায়দরাবাদের সংস্থায় কর্মরত আইনজীবী হেরা জাভেদের। কনে কলকাতার বাসিন্দা হওয়ায় সেখানেই বিয়ের সমস্ত আয়োজন করা হয় ৷ নিয়ম মেনেই চলছিল সমস্ত কিছু ৷ সোমবার গায়ে হলুদের পর হঠাৎ ছন্দপতন ৷ অসহ্য পেটের যন্ত্রণায় ছটফট করতে শুরু করেন পাত্রী ৷ প্রথমে সামান্য বিষয় ভেবে হাতের কাছে থাকা ওষুধ দিয়েই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয় ৷ কিন্তু মঙ্গলবার অর্থাৎ বিয়ের আগের দিন আরও অবনতি হয় পরিস্থিতির ৷ শেষ পর্যন্ত হেরাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে ৷
advertisement
চিকিৎসকেরা জানান, হেরার অন্ত্রে সমস্যা রয়েছে ৷ নিয়মিত চিকিৎসা দরকার ৷ ট্রিটমেন্ট শেষ না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া সম্ভব নয় ৷ ডাক্তারদের এমন কথায় কনের পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা হয় ৷
ইসলামিক মতে গায়ে হলুদের পর বিয়েতে বাধা পড়া সাংঘাতিক অমঙ্গল ৷ এমন অবস্থায় কনের পক্ষে বিয়ের পিঁড়িতে বসাও সম্ভব নয় ৷ বিয়ে ভেস্তে যাওয়ার শেষ মুহূর্তে এগিয়ে আসে পাত্র ৷ জানিয়ে দেন নির্ধারিত দিনে হাসপাতালেই হবে বিয়ে ৷
পরিবারের জনা ১৫ সদস্যকে নিয়ে জিডি হাসপাতালে বরবেশে বিয়ে করতে পৌঁছান মহম্মদ শাহনওয়াজ আলম ৷ স্যালাইনের চ্যানেল লাগানো অবস্থাতেই লাল লেহেঙ্গায় সেজে কাজির সামনে হাজির হন পাত্রী হেরা জাভেদ ৷ রাইলস টিউব খুলে হুইল চেয়ারে বসেই হেরা শাহনওয়াজকে স্বামী হিসেবে কবুল করলেন ৷
এমন অভিনব বিয়েতে অংশ নেন জিডি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং তাদের কর্মীরা ৷ রীতিমতো উদ্যোগ নিয়ে হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে হেরা-শাহনওয়াজের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন তারা ৷
বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর হেরাকে হাসপাতালে ছেড়ে সমস্ত আত্মীয় স্বজন ও বর শাহনওয়াজও ফিরে যান বিয়েবাড়িতে ৷ সেখানে বেবি নান, মটন বিরিয়ানি, চিকেন চাপ ও শাহি টুকরাতেই হয় মধুরেন সমাপয়েৎ ৷