চোখে মুখে আতঙ্কের রেশ। বাবা মা ধানবাদে। দু একদিন পরেই তারা এসে নিয়ে যেত ছোট্ট দীপিকাকে। কিন্তু তার আগেই হঠাৎ বিপর্যয়ে এখন ঠিকানা মধ্য কলকাতার হোটেল। রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন দাদু দিদাও। কবে ফিরতে পারবে বাড়িতে? মনে ঘুরছে একরাশ প্রশ্ন।
হোটেলে থেকে কী ভাবে সম্ভব দিওয়ালি? কী ভাবেই বা হবে ছট পুজোর আয়োজন, এই ভাবনাতেই এখন জড়োসড়ো অনিতা সাউ। হাতের কাছে যা পেয়েছে তা নিয়েই ঘর ছাড়তে হয়েছে। ভোর তখন চারটে। হঠাৎ ঘরের কোন থেকে ঝুর ঝুর করে ঝড়ে পড়ল বালি সুড়কি। দেখতে দেখতে ফাটল। বলতে গিয়ে চোখে জল এল সাউ দম্পতির। বিশেষ করে নাতনিকে নিয়ে কোনও রকমে বাইরে বেরিয়ে আসা, তারপর থেকে শুধুই আর্তনাদ, কান্না। প্রাণে বাঁচিয়ে নাতনিকে হোটেলের ঘর পর্যন্ত আনতে পেরে কিছুটা স্বস্তিতে শিবজি ও অনিতা। কিন্তু মন পড়ে আছে তিন দশকের ভিটেতে।
advertisement
শুধু শিবজি বা অনিতা নন। ওদের বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটের চোখে মুখেও শুক্রবার বিকেলে আতঙ্কের ছাপ। দীনেশ সাউ মেয়ে বউ জামাই নিয়ে পরিবারের আট সদস্যের ঠিকানা মধ্য কলকাতার হোটেলের দুই কামরা। সেখান বসেই দীনেশের গলায় প্রশ্ন, কী ভাবে চলবে সংসার? ব্যবসা বন্ধ রাখতে হবে কত দিন জানি না। চার দশকের বেশি সময় ধরে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা দীনেশ। পুনম বিয়ের পর থেকে ওই বাড়িতে। হঠাৎ এ ভাবে ঘর ছাড়তে হবে ভাবতেও পারছেন না। সামনেই ওদের উৎসব। ছট পুজো করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা নেমেছে তাঁদের মনেও। কত দিন থাকতে হবে এ ভাবে, প্রশ্ন তুলছে হঠাৎ ভিটেহীন পরিবারগুলো।