এক সময়ের সেই সংস্কৃতিকে অনুকরণ করে আসানসোল, বালিগঞ্জের মতো উপনির্বাচনের প্রচারে এবার নতুন মাত্রা যোগ করতে চাইছে বিজেপি (BJP West Bengal)। আর গেরুয়া ব্রিগেডের এই প্রচার কৌশল তৈরি হয়েছে দলের নেত্রী এবং যাত্রাপাড়ার পরিচিত মুখ পাপিয়া অধিকারীকে কেন্দ্র করে৷
আরও পড়ুন: 'আসানসোলে খেলা ভালই জমবে', ফের স্বমেজাজে দাপুটে অনুব্রত মণ্ডল, কেন এমন বললেন?
advertisement
সব ঠিকঠাক থাকলে, আজ আসানসোল থেকে বিজেপি-র প্রচার সভায় এই সাংস্কৃতিক মঞ্চ তাদের গান, পথনাটিকা দিয়ে সাংস্কৃতিক প্রচার শুরু করবে। তফাৎ নিশ্চই থাকবে। বামেদের সময় শিল্পীদের গলায় যেমন শোনা যেত, কমিউনিষ্ট ইন্টারন্যাশনাল আদলের গান, বিজেপির সভায় সেখানে থাকবে জাতীয়তাবাদী সঙ্গীত৷ সঙ্গে গেরুয়া সংস্কৃতির ছোঁয়া।
বিজেপির এই প্রচারে পথনাটক বা গানের বিষয় নির্বাচনে একদিকে রাজ্যে তৃণমূলের অপশাসনকে যেমন তুলে ধরা হবে, পাশাপাশি, বিজেপির হয়ে সওয়াল করে পাল্টে দেওয়ার বার্তা দেওয়ার দাবিও উঠবে। নাটক, গান বাঁধা হয়েছে রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক নানা মশলা দিয়ে। সেই পঞ্চ ব্যঞ্জনে আছে অনিস খানের খুন থেকে শুরু করে রামপুরহাট প্রসঙ্গ। পানিহাটি, ঝালদার জনপ্রতিনিধি খুনের মতো বিষয়ও থাকবে। আর, মমতা থেকে অনুব্রতর মতো নানা চরিত্র নিয়ে সরস, কৌতুকময় উপস্থাপনা।
আরও পড়ুন: দুয়ারে ভোট গ্রহণের জন্য পৌঁছে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন; সুযোগ পাচ্ছেন বয়স্করা
বিজেপির আশা, নামজাদা শিল্পী না থাকলেও, বিষয়ের গুনে প্রচার সভা জমিয়ে দিতে পারবেন এঁরা। গরমে গরমা গরম প্রচার। যদিও, বিজেপির একাংশই এত সহজে এই টিমকে আগাম নম্বর দিতে নারাজ৷ তাদের মতে, পাপিয়া অধিকারীর মতো দু চারজন চেনা মুখ ছাড়া শিল্পীর তালিকায় পরিচিত মুখ তেমন জোটাতে পারেনি বিজেপি। কোভিড কালে যাত্রা, অপেরা বন্ধ হয়ে কাজ হারিয়ে বসে থাকা শিল্পীদের একাংশকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে বিজেপির এই সাংস্কৃতিক প্রচার মঞ্চ। ফলে এর সঙ্গে বাম আমলের গণনাট্যের তুলনা টানা বাতুলতা ছাড়া কিছু নয়।
সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জগতের অনেকেই মনে করছেন, গণনাট্যের সঙ্গে বিজেপির এই মঞ্চের আসমান জমিন ফারাক।
ফারাক দু' জায়গায়, গণনাট্যের শিল্পীরা ছিলেন দলের রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে সম মনোভাবাপন্ন। ফলে, তাঁদের সৃজনে দলের রাজনৈতিক দর্শনের ছাপ থাকত স্পষ্ট। সর্বোপরি গণনাট্য ছিল বাম সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মুখ। একটা ধারাবাহিক অনুশীলনের ফসল। বিজেপির এই সাংস্কৃতিক মঞ্চ আসলে, অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করা শিল্পী জুটিয়ে তৈরি ভোটের বৈতরনী পার করার মঞ্চ।
তবে, নিন্দুকরা কিন্তু এর মধ্যে রাম - বাম যোগও দেখছে। বলছে, গুনগত মান যাই হোক না কেন, শেষমেশ সেই বাম সংস্কৃতির শরণ নিয়েই প্রচারে ভরসা খুঁজছে বিজেপি!