পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ভোটে কার্যত এনডিএ সমর্থিত দলীয় প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জিতিয়ে আনার মধ্যে এনডিএ শরিকদের মোদির বিজেপির উপরে নিরঙ্কুশ আস্থার প্রমাণ রাখা যাবে। পাশাপাশি, বিরোধী শিবির থেকে সমর্থন আদায় করা গেলে, রাজনৈতিক ভাবে বার্তা দিতে পারবে বিজেপি।
আরও পড়়ুন: 'জয় বাংলা', কলকাতায় এসে দ্রৌপদীর মুখে মমতার স্লোগান! পিছনে কি এই অঙ্ক?
advertisement
সেই কারণে রাষ্ট্রপতি ভোটে অনায়াস জয় নিশ্চিত হওয়া সত্বেও, একটি ভোটও নষ্ট করতে চায় না বিজেপি। আজ সেই পরিকল্পনারই প্রমাণ পাওয়া গেল কলকাতায় দ্রৌপদী মুর্মুর সভায়। সভায় দলীয় সাংসদ, বিধায়কদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাষ্টপতি ভোট পরিচালনায় এ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেন, 'রাষ্ট্রপতি ভোটে আমাদের জয় নিশ্চিত। কিন্তু, আমাদের লক্ষ্য জয়ের ব্যবধান বাড়ানো। আমরা মনে করি, আগের বারের চেয়ে এবার ব্যবধান আরও বাড়বে। কিন্তু, তাই বলে ভোট নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।'
সব সাংসদ, বিধায়কদের রীতিমতো সতর্ক করে শেখাওয়াত আরও বলেন, আগামী ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে সব সাংসদকে দিল্লি পৌঁছতে হবে। কোনও ভাবে ভোট দিতে যাতে ভুল না হয়, তার জন্য ভোট দেওয়ার পদ্ধতিগত খুঁটিনাটি সব বিষয়ই সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন শেখাওয়াত।
আরও পড়়ুন: বিজেপির চাপে নত, তবু এনডিএ'র দ্রৌপদী মুর্মুকেই সমর্থন করবে উদ্ধবের শিবসেনা
বৈঠকে উপস্থিত এক সাংসদের মতে, ১৮ জুলাই সাংসদরা দিল্লির সংসদে ভোট দেবেন। তার আগে, দিল্লিতে আরেক দফা 'মক পোলিং' হবে। সেখানে সব সাংসদকে( বিশেষত যাঁরা এবারই প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছেন) তাঁদের ভোট দিতে হবে। সে কারণে আজ এক দফা শিখিয়ে পড়িয়ে গেলেন শেখাওয়াত।
একই সঙ্গে শেখায়াত সব সাংসদকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনও অজুহাতেই ১৬ জুলাই দিল্লিতে অনুপস্থিত হওয়া যাবে না। কিছুটা রসিকতা করে শেখায়াত বলেন, 'ওই দিন কোনভাবেই ছুটি মিলবে না। আর, ছুটি নিতে হলে তা মঞ্জুর করাতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিম্বা অমিত শাহের থেকে। এবার, আপনারাই ঠিক করুন, আপনারা ছুটি চেয়ে আবেদন করে চিঠি দেবেন কি না। তবে, একটা কথা বলে রাখি, চিঠি দিলেও, তার উত্তর ওপার থেকে কী আসবে, সেটা এখনি লিখে রাখতে পারেন। উত্তর হল " না "।'
একই কথা প্রযোয্য রাজ্যের ৬৯ জন বিধায়কের ক্ষেত্রে। সে কারণে, শেখায়াতের নির্দেশ মেনে আগামী ১৬ জুলাই রাজ্যের সব বিধায়কদের কলকাতায় চলে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৬ বা ১৭ জুলাই সাংসদদের মতো এ রাজ্যের বিধায়করাও মক পোলে অংশ নেবেন। কারণ, বিজেপির শতকরা ৯০ ভাগ বিধায়কই এবার প্রথমবার এসেছেন রাজ্য বিধানসভায়। ফলে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো হাইপ্রোফাইল নির্বাচনে ভোট দেওয়ার কোনও অভিজ্ঞতাও নেই তাঁদের।
রাজনৈতিক মহলের মতে, শেখায়াতের এই কথায় রসিকতার ছোঁয়া থাকলেও, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলীয় প্রতিটি ভোট নিশ্চিত করাকে বিজেপি যে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, এই নির্দেশই তার প্রমাণ।