বৃহস্পতিবার বিধানসভার চলতি অধিবেশনের শেষ দিনের শেষ প্রহরে গলায় এই প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে বিধানসভার গেটের বাইরে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসংস্থান নিয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিবাদ করলেন বিজেপি বিধায়করা। রীতিমতো ঝালমুড়ি, ঘুগনি ও চা এর পসরা সাজিয়ে হৈ চৈ জুড়ে দিলেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, শঙ্কর ঘোষ, মনোজ টিগ্গা, দীপক বর্মনরা৷ শুরুতে নিজেদের মধ্য কেনাবেচা দিয়ে শুরু। এক সময় অগ্নিমিত্রাকে দেখা গেল পথচলতি গাড়ির চালক ও যাত্রীদের হাতে ঝালমুড়ির প্যাকেট তুলে দিতে। তবে, 'জমাটি প্রচার' হলেও, ঝালমুড়ি বা ঘুগনি বিক্রি কতটা আয় করা গিয়েছে, তার কোন হিসেব মেলেনি।
advertisement
আরও পড়ুন: উচ্চ মাধ্যমিকে অনলাইন নাম তোলার সময় ভাগ সংসদের, জেলা ও কলকাতার নিয়ম জানুন
বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই এই অভিনব প্রতিবাদের পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। অধিবেশন শুরুর আগের দিন নবান্ন অভিযানে যখন ব্যস্ত বিজেপি, তখন মেদিনীপুরে এক প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতার দিশা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চা, ঘুগনি, ঝালমুড়ি বিক্রির দৃষ্টান্ত দিয়েছিলেন। এরপরেই রাজ্যের কর্মসংস্থান ও শিক্ষা দুর্নীতির দৃষ্টান্তকে সামনে এনে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপি। তখনি ঠিক হয়, বিধানসভার চলতি অধিবেশনে এই বিষয়টিকে ইস্যু করে নাটকীয় ভাবে প্রতিবাদ করবে বিজেপি।
আরও পড়ুন: দেশে বাড়ছে কোটিপতি, দরিদ্ররা আরও দরিদ্র হচ্ছে! ভয়াবহ আর্থিক বৈষম্যের শিকার ভারত
সেই মতো বুধবারই বিধানসভায় এই প্রতীকী প্রতিবাদ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বোলপুরের শিশু মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় হৈ চৈ করার পর, একই দিনে আর এই ইস্যু সামনে আনতে চাননি শুভেন্দু অধিকারী। সে কারণে, এদিন অধিবেশন শেষ হওয়ার পর বিধানসভার মূল গেটের বাইরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি করে বিজেপি বিধায়কদের একাংশ। প্ল্যাকার্ডের বক্তব্য থেকে নিশানা স্পষ্ট। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের মতে, "সম্ভবনাময় শিক্ষিত বেকার যুবক, যুবতীরা চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি না পেয়ে প্রায় ২ বছর ধরে রাস্তায় বসে ধর্ণা দিচ্ছে৷ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবে পঠনপাঠন শিকেয় উঠতে বসেছে। রাজ্যে কোনও শিল্প নেই, বিনিয়োগ নেই। এই অবস্থায় রাজ্যের তরুণ প্রজন্মকে মুখ্যমন্ত্রী চা, ঘুগনি,ঝালমুড়ি বিক্রি করে স্বনির্ভর হওয়ার দিশা দেখাচ্ছেন। বলছেন চপ শিল্পের কথা। এটা ভাবা যায়? আমরা কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্য সরকারের এই সীমাহীন উদাসিনতার বিষয়টি আমাদের প্রতিবাদের মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাইছি।"
যদিও, বিজেপির এই প্রতিবাদকে কার্যত নাটুকেপনা বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল৷ তৃণমূল উপমুখ্য সচেতক তাপস রায়ের মতে, ওরা এই প্রতিবাদ করে সমাজে যাঁরা চা, ঝালমুড়ি বিক্রি করে তাঁদের অসম্মান করল। ওদের মনে রাখা উচিত, ওদের দলের নেতা ও দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে চা বিক্রি দিয়ে জীবন শুরু করে আজ এই উচ্চতায় পৌঁছেছেন বলে গর্ব বোধ করেন।" তবে, শঙ্কর ঘোষের দাবি, তাঁরা কোনও পেশাকে ছোট করে দেখাবার জন্য এটা করেননি। তাঁরা এটাই বলতে চেয়েছেন, একজন চা বিক্রেতার ছেলেও তৃণমূলের এই শিক্ষা দুর্নীতির শিকার হয়ে আজ রাস্তায় বসে আছেন।