কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কিছুদিন পর মঙ্গলবার রাতে প্রকাশ করা হল বঙ্গ বিজেপির ৪৩ টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৩৬ টির জেলা কমিটি। দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফ থেকেই ঘোষণা করা হয়েছে ৩৬টি সাংগঠনিক জেলার কমিটি। বাকি সাতটি সাংগঠনিক জেলার কমিটি এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত না থাকায় তা প্রকাশ করা যায়নি বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।
advertisement
আরও পড়ুন: মুহূর্তে মৃ*ত্যু ৭৬ জন অসহায় যাত্রীর! ভয়ঙ্কর বাস দুর্ঘটনা, বেরল একের পর এক তালগোল পাকানো দেহ!
কলকাতা উত্তর, উত্তর শহরতলি, দক্ষিণ কলকাতা, ব্যারাকপুর, যাদবপুর , হাওড়া সদর – এই সকল সাংগঠনিক জেলার কমিটি প্রকাশ এখনো বাকি। তবে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলা কমিটি প্রকাশ না হওয়া জেলা গুলির উপর আগামী ২২ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই সেই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে এখনো কমিটি নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক করা যায়নি। সে কারণেই বাকি রয়েছে বেশ কয়েকটি জেলার কমিটি গঠন এবং তা প্রকাশের কাজ।
তবে রাজনৈতিকভাবে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় রাজ্য বিজেপির ৪৩টা জেলা কমিটির মধ্যে কয়েকটি বাদে অনেক জেলার কমিটির নাম প্রকাশ হয়েছে । এখানে দেখা যাচ্ছে প্রচুর পুরোন দিনের লোক পদাধিকারী পদে ফিরে এসেছে। এর মধ্যে কোচবিহার , বাঁকুড়া , এবং ঝাড়গ্ৰামে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। নিষ্ক্রিয় কর্মীদের সক্রিয় করতে জেলায় জেলায় শমীক ভট্টাচার্যের নতুন চাল।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য রাঢ়বঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় কমিটিতে পুরনো পদাধিকারীদের সংখ্যা সিংহভাগ রাখা হয়েছে। তবে রাঢ়বঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গকে বারবার বঙ্গ বিজেপি তার শক্ত ঘাঁটি বলেই দাবি করে এসেছে। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গ এবং রাঢ়বঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় ভোট কমেছে বিজেপির। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা আদি পুরনো দ্বন্দ্ব মিটিয়ে বঙ্গ বিজেপি সকলকে ব্যালেন্স করে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শক্ত লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তবে কমিটিতে রদবদলের পর একাধিক জেলায় দলীয় অন্তর কলহ প্রকাশ্যে আসার ছবিও দেখা গিয়েছে পূর্বে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে কিংবা বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক সে ধরনের দুর্বলতা কিংবা অন্তর কলহ এর আঁচ যাতে কোন ভাবেই প্রকাশ্যে না আসে সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই প্রকাশিত হওয়া প্রত্যেকটি জেলা কমিটিতেই পুরনো কমিটির বেশ কিছু সদস্য রাখা হয়েছে। তবে কমিটি অপ্রকাশিত সাংগঠনিক জেলা গুলির বেশ কয়েকটির ক্ষেত্রে দলীয় ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসার দৃষ্টান্ত রয়েছে অতীতে।
তাহলে কি প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে সেই ক্ষোভের আগুন কোনও ভাবে বাইরে বেরিয়ে না আসে সে জন্যই কমিটি প্রকাশ আপাতত স্থগিত রাখা হল বেশ কয়েকটি জেলায় প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। তবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে শমীক ভট্টাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর বারংবারি প্রকাশ্য মন্তব্যে কিংবা জনসভার বক্তব্যে বুঝিয়েছিলেন পুরনোদের দায়িত্ব এবং মর্যাদা বাড়ছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের তরফ থেকেও সেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল বঙ্গের গেরুয়া শিবিরকে। সব মিলিয়ে তার প্রতিফলন জেলা কমিটিতে দেখা যাচ্ছে তা বলা বাহুল্য। তবে আদি নব্য দন্দ ঘুচিয়ে বঙ্গ বিজেপি আগামী নির্বাচনে কতখানি সঙ্ঘবদ্ধ হতে পারে সেটাই দেখার।