আজকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন ছিলেন বাংলার যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী ও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। মহাকরণের গেটে বাপ্পা ও বাবুসোনার গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনার দিন কয়েক আগে মেদিনীপুরের মূক ও বধির তরুণী শেফালি দাসকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে মহাকরণে ধর্নায় বসে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন সেদিনের যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর অপমান, লাঞ্ছনা মেনে নিতে পারেননি বন্ডেলগেটের বাপ্পা ও গড়চার বাবুসোনা। কিন্তু তা বলে গায়ে আগুন গিয়ে আত্মাহুতি দেওয়ার চেষ্টা?
advertisement
সোমবার বন্ডেলগেটে নিজের বাড়ির অফিস ঘরে বসে ঘটনার প্রসঙ্গ উঠতেই টাইম মেশিনে চড়ে বাপ্পার মন চলে যায় আড়াই দশক আগের সেই দিনটায়। বলেন, "বয়সটা কম ছিল। মমতাদি তখন আমাদের চোখে সারদাময়ী বা মাতঙ্গিনীর থেকে কম নয়। নেত্রীর অপমানের বদলা নিতে বিবেকের তাড়নায় সেদিন ওই রকম একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছিলাম।"
এতোটা তো তাও ঠিক আছে! কিন্তু যে নেত্রীর জন্য সেদিন গায়ে আগুন দিয়ে জীবন বিসর্জন দিতে গিয়েছিলেন বাপ্পা, বাবুসোনারা, সেই ওরা আজ দিদির দল করেন না! যান না একুশে জুলাই-র সমাবেশে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাপ্পা, বাবুসোনারা আজ দিদির থেকে অনেক দূরে। একটা সময়ে যাঁরা নেত্রীর অপমানের বদলা নিতে মহাকরণের সামনে গায়ে আগুন দিয়েছিলেন! পরের দিন সংবাদমাধ্যমে হেডলাইন হয়েছিলেন৷ সেই বাপ্পা ঘোষরা রয়ে গিয়েছেন অনেক দূরে, অন্ধকারে। তবে আড়াই দশক আগের সেই বিকেলটার জন্য আফসোস নেই ওঁদের। একুশে জুলাই-র প্রাক্কালে বাপ্পা বলছিলেন, "দিদির জন্য আজও মন কাঁদে। দিদির বিপদ দেখলে আবারও একই রাস্তায় হাঁটবো। আবারও গায়ে আগুন দিতে দ্বিতীয়বার ভাবব না।"
সম্প্রতি আদি ও প্রকৃত মমতাপন্থীদের দলে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছেন ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু বাপ্পা, বাবুসোনাদের কী চেনেন পিকে? জানেন কি দু'যুগ আগের সেই ইতিহাস? সেদিন এক নেত্রীর জন্য গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দিতে গিয়েছিলেন এই শহরের দুই যুবক৷
PARADIP GHOSH