TRENDING:

সোনাগাছিতে ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি যৌনকর্মী, নাগরিকত্ব আইনে সংশয়ে

Last Updated:

সোনাগাছিতে বাংলাদেশি মহিলাদের সংখ্যা ৭০ শতাংশের বেশি। কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব আইনের ফাঁসে কলে পড়ে তাদের চিন্তা গ্রাস করেছে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
SHANKU SANTRA
advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, তখন খোদ কলকাতায় নাগরিকত্ব আইনের নিরিখে রেডলাইট এরিয়ার কী পরিস্থিতি? সোনাগাছি, বউবাজার পতিতাপল্লিগুলিতে হাজার হাজার মহিলা যৌনকর্মী জীবিকা নির্বাহ করেন৷ তাঁদের বেশির ভাগই এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। যাঁরা বহু বছর ধরে এই জীবিকায় রয়েছেন, তাঁদের অনেকের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড রয়েছে। এ দেশে ভোটাধিকার রয়েছে। বহু মেয়ে রয়েছে ,যাদের এখনও পর্যন্ত কোনও বৈধ নথি নেই এ দেশের।

advertisement

মূলত, সোনাগাছিতে বাংলাদেশি মহিলাদের সংখ্যা ৭০ শতাংশের বেশি। কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব আইনের ফাঁসে কলে পড়ে তাদের চিন্তা গ্রাস করেছে। এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলে তাঁরা যাবেন কোথায়! তা নিয়ে চিন্তায় যৌনকর্মীরা৷

বেড়া টপকে প্রতিদিন প্রচুর মেয়ে ভারতে আসেন উপার্জনের তাগিদে। এই মহিলারা বেশির ভাগই প্রথমে কোনও রাজমিস্ত্রির সাহায্যকারী শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। তারপর আস্তে আস্তে ,প্রয়োজনের টাকা না পেয়ে,অমানবিক ভাবে প্রতারিত হন,আর্থিক ও শারীরিক ভাবে। যেহেতু চোরাই পথে এই দেশে প্রবেশ করেন, তাই প্রতিবাদের বদলে, ভয়ে চার দেওয়ালের মধ্যে এঁরা আটকে থাকেন। এঁরা আসেন মূলত দালালদের পাল্লায় পড়ে।

advertisement

এ রাজ্যে পতিতাপল্লিরগুলির দেখভাল করে 'দুর্বার' নামে সংগঠনের রেগুলেটরি বোর্ড। সোনাগাছির ৯,১০,৪৫ নম্বর ইত্যাদি বাড়িগুলিতে রয়েছেন প্রচুর বাংলাদেশি মহিলা। এই বিষয়ে দূর্বারের এক আধিকারিকের সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান, 'আমাদের রেগুলেটরি বোর্ড সব সময় কাজ করছে। আমরা খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নিই। তাঁকে ডেকে কাউন্সেলিং ও বৈধ নাগরিকত্ব নথি দেখতে চাই। তারপরও যদি কোনও বাড়ির মালিক অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে রাখে, সেটার দায়িত্ব ওই বাড়ির মালিকের।'

advertisement

মলিনা ( নাম পরিবর্তিত), বাংলাদেশি মহিলা। স্বামী জীবিকার তাগিদে রাতের অন্ধকারে ভারতে নিয়ে আসে তাঁকে। কিছু দিন কাটার পর ,ছেলেকে নিয়ে কোথাও চলে যায়। তারপর থেকে আর কোনও দিন দেখা হয়নি। সে বছর ১২ আগের কথা। এখন ঠাঁই সোনাগাছিতে একটি বিল্ডিংয়ে। বয়স ৩০ বছর। ভোটার কার্ড ,রেশন কার্ড হয়েছে। কিন্তু জন্মের সার্টিফিকেট নেই। এতদিন ভেবে আসছিল,সে এই দেশের নাগরিক হয়ে গিয়েছেন। এখন আবার সিঁদুরে মেঘ দেখছে।

advertisement

ইতিমধ্যে অনেক মেয়ে এ দেশ থেকে ও দেশে পাড়ি দিয়েছেন রাতের অন্ধকারে। কেউ কেউ ভেবে শিউরে উঠছে। প্রীতি (নাম পরিবর্তিত) বাংলাদেশ থেকে ১৫ বছর আগে এসেছিলেন। সরাসরি বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে রাতের অন্ধকারে। ভোরের ট্রেন ধরে শহর কলকাতার নিঝুম গলিতে। দালালের কথা বিশ্বাস করে,তার ফুফার ফ্ল্যাটে। সেই যা আসা। আজও অবধি ঘর পরিবর্তন হয়েছে,তবে গলি পরিবর্তন হয়নি।

গলিতে এক বাবুর সঙ্গে ভালোবাসা করে একটি ছেলে হয়েছে। তাঁর বয়স এখন ১১ বছর। জেলার একটি নামী স্কুলের বোর্ডিংয়ে থেকে পড়াশুনা করে। নাগরিকত্বের আইনে যদি ভারত ত্যাগ করতে হয়, তা হলে বাংলাদেশে যাওয়ার উপায় নেই। 'কী করবে! জেল! ছেলের কী হবে?' এই কথা বলতে বলতে চোখে জল, গলা জড়িয়ে আসে ওঁর। একটাই কথা, 'আমরা প্রচুর মেয়ে আছি,আমরা সবাই ও দেশ থেকে পেটের দায়ে এসেছি। বাড়ির বেশির ভাগ জানেন আমরা মরে গেছি। কত বছর কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁরা কোথায় আছেন, জানি না। পরিবারের জন্যই চলে এসেছিলাম। ফেরা আর সম্ভব না। মৃত্যু ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।'

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ফাঁকা জায়গার লাগবে না, আমবাগানেই হচ্ছে কুইন্টাল কুইন্টাল ফলন! বিনা ব্যয়ে লাভ পাচ্ছেন চাষি
আরও দেখুন

শুধু সোনাগাছির যৌনকর্মীরাই নন। এই ভাবে দেশের প্রতিটা পতিতাপল্লির বাংলাদেশি মহিলারা ভয়ে রয়েছেন। একটি সেচ্ছা সেবী সংগঠনের কথায়, 'পুলিশ সব জানে। আমরা পুলিশকে যখন নির্দিষ্ট খবর দিই, পুলিশ এই মেয়েদের ধরে জেলে পাঠায়। আর জেলে বসে পচে এরা। আবার কখনও পুলিশ ওই মহিলাদের দালাল বা বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কিছু একটা ব্যবস্থা করে নেয়। সব জায়গায় ম্যানেজের গল্প।' এই বিষয়ে পুলিশের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
সোনাগাছিতে ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি যৌনকর্মী, নাগরিকত্ব আইনে সংশয়ে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল