কিন্তু শুক্রবার আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে বন্দি হিসেবে পা দেওয়ার পর জোরাবো মানসিক ধাক্কা খেয়েছিলেন তিনি৷ সম্ভবত সেই কারণেই রাতে কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লেন অর্পিতা৷ যদিও সকাল থেকে কিছুটা ধাতস্থ হয়ে ওঠেন তিনি৷
আলিপুর জেল সূত্রে খবর, এ দিন সকালে উঠে চা বিস্কুট খেয়েছেন অর্পিতা৷ পরে প্রাতঃরাশ মধ্যাহ্নভোজও সেরেছেন তিনি৷ দুপুরে খেয়েছেন ভাত, ডাল এবং সব্জি৷ তবে নতুন পরিবেশে গিয়ে বেশ কিছুটা থম মেরে গিয়েছেন অর্পিতা৷ প্রায় কারও সঙ্গে কথাই বলছেন না৷ চুপচাপই নিজের মতো রয়েছেন বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত অর্পিতা৷ আলিপুর জেল সূত্রে খবর, বাইরের কোনও জিনিসই পাবেন না তিনি৷ থাকতে হবে সাধারণ আর পাঁচজন বন্দির মতোই৷
advertisement
যদিও অর্পিতার এই আচরণগত পরিবর্তন কৃতকর্মের অনুশোচনা বলে মানতে নারাজ মনোবিদরা৷ মনোবিদ হিরন্ময় সাহা বলেন, 'জেলে গেলেই কারও মানসিকতায় বদল আসবে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই৷ দাগী আসামীরা তো বহুবার জেলে যায়৷ এরা দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ লুট করেছে৷ যদিও মানসিক পরিবর্তন হওয়াই হতো, তাহলে তা অনেক দিন আগেই হয়ে যেত৷ বরং জেলে গিয়ে এই ধরনের মানুষ কী ভাবে বদলা নেবে, তা ভাবতে থাকে৷'
আরও পড়ুন: ১১ বছরের ছবিতে বদল, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে আর পার্থ নন, এবার হয়তো বসবেন ফিরহাদ
শুক্রবার আদালতে শুনানি চলাকালীনই অর্পিতার প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁর আইনজীবী৷ একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ইডি-র আইনজীবীও৷ অর্পিতার উপরে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দেন বিচারকও৷ সেই মতো অর্পিতার উপর নজর রাখতে বাড়তি নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
ইডি সূত্রে খবর, মহিলা অফিসার নিয়েখুব দ্রুত তদন্তর প্রয়োজনে আলিপুর সংশোধনাগারে যাবেন তারা। সেখানেই অর্পিতাকে জেরা করা হবে৷ কারণ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে যে কোটি কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে, সেই টাকা কার এবং তার উৎস জানাই লক্ষ্য ইডি-র? কারণ এখনও পর্যন্ত অর্পিতা এবং পার্থ দু' জনেই দাবি করেছেন, ওই টাকা তাঁদের নয়৷
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন অর্পিতা৷ বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির অধিকারী হয়ে ওঠেন তিনি৷ অন্তত এমনই মত ইডি কর্তাদের৷ বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, গাড়ি, অলঙ্কার কোনও কিছুরই অভাব ছিল না৷ প্রথমে ইডি-র হাতে গ্রেফতারি তার পরে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে এসে সেই জীবনে আপাতত ইতি পড়ল৷