স্থানীয় সূত্রে খবর, মাত্র কয়েক বছর আগেও গার্ডেনরিচ এলাকার অ্যাজবেস্টস মোড়ে টালির বাড়িতে ভাড়া থাকত নাসির খানের পরিবার৷ ২০১১ সালে নিজের একটি ট্রাক কিনে ব্যবসা শুরু করেন নাসির৷ তখনও কল সেন্টারেই কাজ করত নাসির পুত্র আমির৷ ওই সময় থেকেই নাসির খান এবং তাঁর পরিবারের অবস্থা বদলাতে শুরু করে৷
আরও পড়ুন: 'গার্ডেনরিচে টাকা উদ্ধারে ওনার কপালে ভাঁজ কেন?' ফিরহাদকে নিশানা করলেন সুজন
advertisement
অ্যাজবেস্টস মোড় থেকে তাঁরা উঠে আসে গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল এলাকার অপরিসর গলির মধ্যে অবস্থিত একটি দোতলা বাড়িতে৷ যদিও বাইরে থেকে সেই বাড়ি ছিল নিতান্তই সাদামাটা৷ ফলে কখনওই খান পরিবারকে নিয়ে বিশেষ সন্দেহ দানা বাঁধেনি প্রতিবেশীদের মনে৷ ফলে শনিবার ইডি হানা এবং ঘণ্টায় ঘণ্টায় কোটি কোিট টাকা উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভিড় বেড়েছে গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল এলাকার সরু গলিতে৷ ছাপোষা এই বাড়িতেই যে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা ভাবতে পারছেন না কেউই!
কিন্তু কীভাবে ফুলে ফেঁপে উঠল নাসির খান এবং তার ছেলের অবস্থা? ইডি সূত্রে খবর, ২০১৫-১৬ সাল থেকেই অনলাইন গেমিংয়ের এই কারবারে হাত পাকাতে শুরু করে আমির৷ এর পর তৈরি করে ফেলে অনলাইন গেমিং অ্যাপ৷ যা আদতে ছিল মানুষকে প্রতারণা করার ফাঁদ৷ সাধারণ মানুষকে দৈনিক ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আয়ের টোপ দিয়ে প্রথমে কিছু টাকা পুরস্কার দেওয়া হত৷ এই ভাবে আস্থা অর্জন করার পর ব্যবহারকারী মোটা টাকা বিনিয়োগ করলেই সেই টাকা গায়েব করে দিত আমির৷ গোটা দেশে তার এই প্রতারণার জাল বিছিয়ে দিয়েছিল আমির৷
আরও পড়ুন: টালিগঞ্জ-বেলঘড়িয়ার সঙ্গে জোর টক্কর গার্ডেনরিচের! দশ ঘণ্টায় মিলল ১৮ কোটি
ইডি সূত্রে খবর, আমির এবং অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজনের নামে ই-নাগেটস নামে অনলাইন গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে বছর দেড়েক আগে পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়৷ অভিযোগ জানায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ৷
কিন্তু তার পরেও আমির বা তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কেন পুলিশ ব্যবস্থা নিল না, সেই প্রশ্নও উঠছে৷ আমির অবশ্য বর্তমানে নিখোঁজ৷ এ দিন আমিরের গার্ডেনরিচের বাড়ি থেকে মোট ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে৷ অথচ ওই গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ কোটি টাকা প্রতারণা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ বাকি টাকা কোথায় গেল, আমিরকে হাতে না পেলে তার সন্ধানও পাওয়ায়ও কঠিন বলে মানছেন ইডি কর্তারা৷