নবকৃষ্ণ লাহা না দুর্গাচরণ লাহা কে লাহাবাড়িতে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন, তা জানা যায় না। তবে তাঁর থেকেও ছাপিয়ে যায় বাড়িতে অষ্টধাতুর দেবী মূর্তিকে ঘিরে গল্প। শোনা যায় এক ডাকাতদল জঙ্গলে ফেলে গিয়েছিলেন। তারপরই এই মূর্তি কালক্রমে লাহাবাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হন জয় জয় মা বলে। ইনিই কুলদেবী লাহা পরিবারে।
কুলদেবী লাহাবাড়িতে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরই শুরু হয় দুর্গা উতসব । তবে এখানে দুর্গা মা নন মেয়ে। রীতিমত জামাইয়ের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন বাপের বাড়ি। তাই মহিষাসুর নেই দেবীর পায়ের নীচে। প্রতিমা দশভূজা নন। একদম স্বামী সোহাগী মেয়েটি যেন। এখানে দুর্গা বসেন শিবের কোলে। শিবের হাত তাঁকে জড়িয়ে থাকে। আলিঙ্গনে।
advertisement
অতীতের নিয়ম রীতি নিষ্ঠা অটুট লাহাবাড়িতে। জন্মাষ্টমীর পর কাঠামোপুজো দিয়ে কার্যত শুরু হয়ে যায় পুজো। কাঠামোর মধ্যে একটি ছোট্ট মাটির গনেশকে পুজো করা হয়। পরে যখন বড় গনেশ তৈরি হয়, তখন ছোট গনেশটিকে বড় গনেশের পেটের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
এখন চার শরিক। এই লাহা পরিবারে। সেই কারণে প্রতিবছর এক একজন শরিক দায়িত্ব নেন পুজোর ।
লাহাবাড়িতে ভোগেও রয়েছে বৈচিত্র। এই বাড়ির পুজোর ভোগ শুধুই মিষ্টি। নানারকমের নাড়ু সমেত একুশরকমের মিষ্টি ভোগ দেওয়া হয় দেবীর সামনে। আর আছে ধুনো পোড়ানো। অষ্টমীর সন্ধিপুজো চলাকালিন মহিলারা দু-হাতে মাটির সরায় মধ্যে ধুনো জ্বালিয়ে বসে থাকেন।
বিসর্জনের গল্পও কম চমকপ্রদ নয় এ বাড়িতে । আজো বিসর্জনের সময় বাড়ির সমস্ত দরজা জানালা বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাতে কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারেন না। প্রতিমা বেরিয়ে যাওয়ার পরও সিংহ দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।