লোকাল ট্রেনের পরিকাঠামোয় এসি লোকাল চালানো নিয়ে ফাঁপড়ে পড়েছে রেল। এসি ট্রেন চালানোয় নানা রকমের জট তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে অবশ্য দ্বিতীয় রেককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাণাঘাট কারশেডে। ১২ কোচের এই এসি লোকালের প্রত্যেকটি কামরায় চারটি করে দরজা থাকবে। মেট্রোর মতো ট্রেন স্টেশনে পৌঁছলে দরজা খুলবে। আবার ট্রেন ছাড়ার আগে দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। এখানেই জট, শিয়ালদা-রানাঘাট রুটে যে পরিমাণ ভিড় হয়,সেখানে মেট্রোর মতো দরজা-খোলা আর বন্ধ হওয়া কি সম্ভব? ভিড়ের নিরিখে শিয়ালদহ ডিভিশনের একাধিক স্টেশন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এক এক রকম। তাই এই প্রক্রিয়াকে কীভাবে সহজ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
advertisement
রক্ষণাবেক্ষণের পদ্ধতিও নন-এসি লোকালের থেকে আলাদা। রেলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ নেই। এই প্রশিক্ষণ নিয়েও ফাঁপড়ে রেল। অমিত ঘোষ( সাধারণ সম্পাদক, মেনস ইউনিয়ন, ইস্টার্ন রেলওয়ে) জানিয়েছেন, ” এতদিন রানাঘাট, সোনারপুর, নারকেলডাঙা, শিয়ালদহ, বারাসতের ট্রেনের এক ধরণের মেইনটেন্যান্স করা হত । এখন LHB প্যাটার্নের ট্রেন এসে গেল। রক্ষণাবেক্ষণ কীভাবে করবে? অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চিন্তাভাবনা নেই। ট্রেনিং নেই। পাশাপাশি দরজা খোলা বন্ধের অসুবিধা কীভাবে দূর হবে? তার জন্য স্টেশনে কর্মীদের যথাযথ ট্রেনিং দিতে হবে। এর কোনওটাই এখনও সম্পন্ন হয়নি।”
শিয়ালদহ ডিভিশন সূত্রে খবর, এই এসি লোকাল ট্রেনের ভাড়াও নন-এসি লোকালের থেকে আলাদা হবে। শিয়ালদহ থেকে ১০ কিলোমিটার নন-এসি লোকালের ভাড়া ৫ টাকা। এসি লোকালের ক্ষেত্রে হবে ২৯ টাকা। ১১ থেকে ১৫ কিলোমিটারের জন্য নন-এসি লোকালে ভাড়া ৫ টাকা। এসি লোকালে ৩৭ টাকা। তবে যাত্রীরা চাইছেন, এসি লোকাল চালানো হোক। এসি রেক চালানো নিয়ে কথাবার্তা শুরু করেছিল শিয়ালদহ ডিভিশন দুই বছর আগে।প্রাথমিকভাবে মহিলা স্পেশালের কয়েকটি কামরা প্রথম শ্রেণীর করা হয়। ভাড়া রাখা হয় কয়েকগুণ বেশি। সেই পরিষেবা খুব ভাল ভাবে নেয়নি যাত্রীরা। তারপর এসি ট্রেন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করেনি ডিভিশনের কর্তারা। অবশেষে পূর্ব রেলওয়ের শিয়ালদহ ডিভিশনে প্রথম এসি রেক চলতে শুরু করবে।
নতুন ট্রেন দুটি সবোর্চ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিবেগে ছুটতে পারবে। চলবে ২৫ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক মোটরে। কোচগুলি স্টেনলেস স্টিলের নির্মিত। প্রতিটি কামরা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ট্রেনগুলির দরজাগুলি মেট্রোর মতো অটোমেটিক খুলবে ও বন্ধ হবে, যার নিয়ন্ত্রণ থাকবে চালক ও ট্রেন ম্যানেজারদের (গার্ড) কাছে। একটি ট্রেনে ১১০০জন যাত্রী বসে যাতায়াত করতে পারবেন। যাত্রী নিরাপত্তার জন্য পুরো ট্রেনটি সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে মোড়া থাকবে। ট্রেনটির গন্তব্য কোথায়, পরবর্তী স্টেশন কোনটি তা যাত্রীদের জানানোর জন্য থাকবে এলসিডি স্ক্রিন। যাত্রী সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে প্রায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে দু’টি রেক এখন কোন রুটে, কখন চলবে তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে অফিস সময়ে ট্রেন দুটি চালানো হতে পারে।