বহরমপুরে দলীয় কর্মসূচি সেড়ে কলকাতায় ফিরছিলেন অভিষেক। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের বাঁ-দিকের লেন ধরে দ্রুত গতিতে ছুটছিল তৃণমূল সাংসদের কনভয়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ, হিমাদ্রি কেমিক্যাল পার হওয়ার পরই আচমকা দুর্ঘটনা।
একটি ব্রেকডাউন ভ্যানের সঙ্গে আটকে রাখা ছিল খারাপ হয়ে যাওয়া দুধের গাড়ি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই গাড়ির পিছনেই ধাক্কা মারে অভিষেকের কনভয়ের পাইলট কার। পাইলট কারের পিছনে ধাক্কা মারে অভিষেকের এসইউভি। দু'টি গাড়িই উলটে গিয়ে পড়ে ডাউন ও আপ লেনের মাঝের ডিভাইডারে
advertisement
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অভিষেককে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। বিশেষ চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে শুরু হয় চিকিৎসা। ভাইপোর দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে অভিষেকের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্ঘটনার তদন্তে নামে সিআইজডি। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে হুগলি জেলা পুলিশ। দুধের গাড়ি, ব্রেকডাউন ভ্যানের চালক ও মালিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে নমুনাও সংগ্রহ করে ফরেনসিক দল।
অন্যদিকে এমআরআই, সিটিস্ক্যান সহ একাধিক পরীক্ষার পর জানা যায়, দুর্ঘটনায় অভিষেকের বাঁ-চোখের অরবিটাল ফ্লোর ভেঙেছে। মুখের গঠন অনেকটাই নির্ভর করে এই হাড়ের ওপর। তা মেরামতির জন্য প্রয়োজন ম্যাক্সিলো ফেসিয়াল সার্জারি।
১২ জনের চিকিৎসক দল অভিষেকের অস্ত্রোপচার করেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক অনির্বাণ ভাদুড়ি। সাড়ে ৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে অভিষেকের বাঁ চোখের নিচে বসানো হয় টাইটেনিয়াম মেশ বা জাল ৷
দিনকয়েক পরেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন অভিষেক। কিন্তু দুর্ঘটনার পর চলতি বছরের বাকি সময়ে আর জনসমক্ষে আসেননি তৃণমূলের এই তরুণ নেতা।