সোমবার সন্ধ্যায় স্ট্র্যান্ড রোডের পূর্ব রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে বিধ্বংসী আগুন লাগে। প্রথমে দমকলের ১০ ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গেলেও পরে ২৫টি ইঞ্জিন যায়। প্রথমে বিল্ডিংয়ের ১৩ তলায় আগুন লাগলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। আর আগুনের লেলিহান শিখায় লিফটে আটকে পড়ে মৃত্যু হয় এত মানুষের। ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদের পরিবারের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরির ঘোষণা করেছেন। একইসঙ্গে রেলের বিরুদ্ধে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'এটা পুরোটাই রেলের জায়গা। কিন্তু রেলের কেউ আসেননি। আমাদের দমকলের পক্ষ থেকে একটা ম্যাপ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটাও দেওয়া হয়নি। দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। কিন্তু আমরা কোনও সাহায্য় পাইনি।' যদিও ঘটনার গুরুত্ব প্রকাশ্যে আসতেই অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ট্যুইটে রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় রেখে কাজ করবেন রেলের আধিকারিকরা। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, কলকাতা পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই মামলা রুজুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজই ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখবে ফরেন্সিক দল।
advertisement
https://twitter.com/PiyushGoyal/status/1369012401421447168
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পূর্ব রেলও। অগ্নিকাণ্ডের কারণ খুঁজতে রাজ্য সরকার ও দমকল কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে সব রকম সাহায্য করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে। ট্য়ুইটে রেলমন্ত্রী লিখেছেন, 'রাজ্য সরকারকে সমস্ত দিক থেকে সাহায্য করবে রেল। নিরাপত্ত নিয়ে কোনও আপোষ করা হবে না।' পূর্ব রেলের এক কর্তা অবশ্য বলেছেন, 'রেলের সব অফিসাররা ছিলেন। পুরো চেষ্টা ছিল। হয়ত ম্য়াপ পাওয়া যায়নি। কিন্তু কর্মীরা চেষ্টা করেছিলেন। ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েছেই।'
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আগুন লাগার পর থেকে টানা দশ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এমনকী ভোর চারটে নাগাদ ফের ওই বিল্ডিংয়ের তেরো তলায় আগুন দেখতে পাওয়া যায়। ফের ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে জানানো হয়েছে দমকলের তরফে। দমকল মন্ত্রী জানিয়েছেন, সন্ধ্য়ায় আগুন লাগার পর দমকল কর্মীরা লিফটে করে ওপরে উঠছিলেন। যে মুহূর্তে লিফট খোলেন তাঁরা, আগুনের লেলিহান শিখায় ঝলসে যান তাঁরা। তা এতটাই ভয়াবহ, দেহ শনাক্ত করতেও সমস্যা হচ্ছিল। তাঁরা অনুমান করতে পারেননি, অন্যদিকের আগুন এপাশে চলে এসেছে।