জার্মানির সিভিল প্রোটেকশন বিভাগের প্রধান রালফ টিসলর জার্মান সংবাদপত্র Süddeutsche Zeitung-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “অনেক বছর ধরে জার্মানিতে এই বিশ্বাস ছিল যে যুদ্ধ এমন কোনও হুমকি নয় যার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে।”
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টায় ২০টিরও বেশি ভূমিকম্প পাকিস্তানের এই শহরে! ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের আশঙ্কা, ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক…
advertisement
টিসলরের মতে, জার্মানিকে অবিলম্বে পুরনো বাংকার, সুড়ঙ্গপথ, মেট্রো স্টেশন, পার্কিং এরিয়া এবং পাবলিক বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টগুলিকে প্রতিরক্ষামূলক আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তর করতে হবে। লক্ষ্য হল যত দ্রুত সম্ভব অন্তত ১০ লক্ষ মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করা।
বর্তমানে জার্মানিতে কোল্ড ওয়ার যুগের প্রায় ২০০০টি বাংকার ও সুরক্ষিত জায়গা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৫৮০টি ব্যবহারের উপযোগী। এইগুলিতে মাত্র ৪.৮ লক্ষ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব, যা জার্মানির মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৫%।
টিসলরের মতে, নতুন বাংকার তৈরি করতে অনেক সময় ও টাকা লাগে, তাই বিদ্যমান পরিকাঠামোগুলিকে দ্রুত কার্যকর করতে হবে। এ জন্য আসন্ন গ্রীষ্মেই একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: ভারতে দ্রুত বাড়ছে কোলন ক্যানসার! চিনে নিন প্রাথমিক উপসর্গ, সতর্ক না হলেই সামনে ভয়ঙ্কর বিপদ…
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থান জার্মানি ছাড়াও বাল্টিক দেশ ও পোল্যান্ডে আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলেছে। মনে করা হচ্ছে, মস্কো ইউরোপে একটি নতুন যুদ্ধ শুরু করতে পারে।
এখন জার্মানি আর এই হুমকিকে উপেক্ষা করার মতো অবস্থায় নেই। বাংকারের পাশাপাশি সাইবার সুরক্ষা এবং ওয়ার্নিং সিস্টেমও উন্নত করা হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত আশ্রয়ে পৌঁছানোর জন্য মোবাইল অ্যাপ, রাস্তার সাইনবোর্ড ও পুরনো সতর্কতামূলক সাইরেনকে আধুনিক প্রযুক্তিতে আপগ্রেড করা হবে।
এখানে ফিনল্যান্ডের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। ফিনল্যান্ডে প্রায় ৫০,০০০টি প্রোটেকটিভ রুম রয়েছে, যা দেশের ৮৫% জনসংখ্যা অর্থাৎ ৪৮ লক্ষ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। কিন্তু এই দিক থেকে জার্মানি অনেক পিছিয়ে।
টিসলর জার্মান সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন, যেন এই পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল দ্রুত বরাদ্দ করা হয়। যদিও মার্চ মাসে সংসদ ঋণসীমা স্থগিত করেছে এবং কয়েক বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ সম্ভব হয়েছে, তবুও এখনো নাগরিক সুরক্ষা পরিকল্পনার জন্য আইনি ভাবে তহবিল বরাদ্দ হয়নি।
এই অর্থের বড় অংশ সেনাবাহিনী, সড়ক, সেতু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো নির্মাণে খরচ করা হবে। তবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় জার্মানির জন্য নাগরিক সুরক্ষায় উপযুক্ত অর্থ বরাদ্দ করা অত্যন্ত জরুরি।