প্রসবের চুড়ান্ত মুহূর্ত উপস্থিত ৷ পৃথিবীর প্রথম আলো দেখতে চলেছে তাদের সন্তান ৷ এমন সময়ে কান ফাটানো আওয়াজ ৷ মঙ্গলবার বিকেলে বেইরুটের সেই বিস্ফোরণ ৷ একবার নয়, পর পর দু’বার ৷ আওয়াজের তীব্রতায় কেঁপে উঠলেন সকলে, ক্যামেরা হাতে কেঁপে ওঠেন এডমন্ডও ৷ মারাত্মক আওয়াজে ভেঙে পড়ল মানুষ সমান উঁচু লেবার রুমের কাঁচের জানলাগুলো ৷ সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেল সমস্ত আলো ৷ কী হয়েছে বোঝার বোধবুদ্ধিও সেই তীব্রতায় লোপ পেয়েছে ৷ কিন্তু এমন বিপদের মুহূর্তেও নিজেদের দায়িত্বজ্ঞান হারাননি চিকিৎসক ও নার্সেরা ৷ অন্য সব কিছুর চিন্তা ছেড়ে প্রায় অন্ধকার লেবার রুমে সফল ও সুস্থভাবে এমান্যুয়েলকে প্রসব করান তারা ৷ ভাঙা কাঁচ, লাখো মানুষের আর্ত চিৎকার, মৃত্যুর মধ্যেই জন্ম নেয় এক নতুন প্রাণ ৷ সমস্ত ঘটনাই ধরা পড়েছে এডমন্ডের তোলা ভিডিওতে ৷
advertisement
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এডমন্ড বলে, ‘আমার ছেলে জর্জ জন্মালই একটা মারাত্মক বিস্ফোরণের মধ্যে..আমি এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না আমরা বেঁচে রয়েছে ৷’ একইসঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা ওরকম সাংঘাতিক পরিস্থিতির মধ্যেও নিজেদের মানসিকভাবে শান্ত রেখে যেভাবে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এডমন্ড ৷ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সদ্যজাত জর্জের তরফে একটি নোট পোস্ট করেছে ওই দম্পতি ৷ তাতে লেখা, ‘আমাকে এতটা যত্নে এত বড় বিপদ থেকে রক্ষা করে এই দুনিয়ায় আনার জন্য ধন্যবাদ ৷ আশা করি কোনও একদিন আমিও তোমাদের জন্য এমনই কিছু করব ৷’
লেবাননের রাজধানীতে মঙ্গলবার যে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা এককথায় ভয়াবহ ৷ ভয়ানক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে স্বপ্ন শহর বেইরুট। রাস্তা ঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ভেঙে পড়া দরজা, জানালা, কাঁচ। ভেঙে গিয়েছে প্রচুর ঘর বাড়ির ছাদ, দেওয়াল। প্রায় ৫০ মাইল দূরেও এই বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে কেঁপে উঠেছে সকলে। বিস্ফোরণের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তা দেখে গোটা দুনিয়াই হকচকিয়ে গিয়েছে ৷ ভিডিওতেই পরিষ্কার যে একটা নয়- পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে মঙ্গলবার বেইরুটে ৷ বেইরুটের ওই বিস্ফোরণে ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, ৫,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গৃহহারা হয়েছেন ৩ লাখের বেশি লেবানিজ।