১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের সেনাবাহিনী দখল করে নেয় ক্ষমতা, দেশ থেকে কার্যত গণতন্ত্রের পতন ঘটে। বন্দী করা হয় ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা NLD-র অন্যতম প্রধান অং সান সু চি (Aung San Suu Kyi) এবং আরও কিছু নেতাকে। তার পর থেকেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই তিন আঙুলের স্যালুট! যা প্রথম দেখা গিয়েছিল সুজান কলিন্সের (Suzanne Collins) উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত দ্য হাঙ্গার গেমস (The Hunger Games) ছবিতে।
advertisement
এই তিন আঙুলের স্যালুটের একটি বৈশিষ্ট্য আছে। ভালো করে দেখলে নজরে আসে যে এক দিকে যেমন হাতের মাঝের তিনটি আঙুল আকাশের দিকে উঁচিয়ে রাখা হয়েছে, তেমনই কড়ে আঙুলটি দিয়ে পিষে রাখা হয়েছে বুড়ো আঙুলটাকে। যা স্বৈরাচারী শাসনের হাতে জনতার নিষ্পেষণের প্রতীকী অর্থ বহন করে। যা গত অক্টোবরেও প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে মহা বজ্রলংকর্নের (Maha Vajiralongkorn) শাসনের প্রতিবাদে দেখা গিয়েছিল। আর হাঙ্গার গেমস ছবিতে এটি দেখা গিয়েছিল স্বৈরাচারী শাসক স্নোয়ের বিরুদ্ধে। জেনিফার লরেন্স (Jennifer Lawrence) অভিনীত ক্যাটনিজ এভারডিন (Katniss Everdeen) চরিত্রটি এই বিক্ষোভের ধরন ছবিতে তুলে ধরেছিল।
তবে থাইল্যান্ডে অবশ্য এই ভাবে বিক্ষোভ জানানোর ধরন প্রথম দেখা গিয়েছিল ২০১৪ সালে। সেখানেও যখন সেনাবাহিনী ক্ষমতা অধিকার করে, দেশের যুবশক্তির একাংশ এক শপিং মলের সামনে দাঁড়িয়ে এই ভাবে বিক্ষোভ জানিয়েছিল। দেখতে দেখতে তা তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেনাবাহিনী এই তিন আঙুলের স্যালুটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও তার প্রচলন বন্ধ করে উঠতে পারেনি। ২০১৪ সালে হংকংয়ের আমব্রেলা রেভোলিউশনেও (Umbrella Revolution) এর ব্যবহার নজরে এসেছিল। যা এবার মায়ানমারেও দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে শুধু থাইল্যান্ডের দৃষ্টান্ত নয়, ২০১০ সাল থেকে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণেও বহির্বিশ্বের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে মায়ানমার- এই তিন আঙুলের স্যালুট সে কথা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয়।