প্রেসিডেন্ট আসাদ গাঁ ঢাকা দিতেই সামনে এসেছিল তবে কি এবার ক্ষমতা হস্তান্তর হতে চলেছে? সে বিষয়ে কোনও আপত্তি নেই বলেই জানালেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ গাজি জালালি। তিনি জানান, দেশের রাশ বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত সিরিয়ার সরকার, এমনটাই জানান জালালি। তবে তিনি চান, বিষয়টি শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হোক!
রবিবার সকালে যৌথ ভাবে সিরিয়ার রাজধানী শহর দামাস্কাসে ঢুকে পড়ে সিরিয়ার প্রধান দুই বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’ । এরপরেই তাঁরা ঘিরে ফেলে দামাস্কাস। বিদ্রোহীরা শহরে ঢুকতেই পিছু হটে সেনাবাহিনীও। রবিবার সকালে বিদ্রোহীরা শহর দখল করার সময়েও দামাস্কাসে সরকারি কোনও প্রতিনিধি বা বাহিনীকে দেখা যায়নি। তাই কার্যত বিনা বাধায় রাজধানী দখল করে নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি সরকার। ব্রিটেনে সিরিয়ার পর্যবেক্ষণাগার থেকে জানানো হয়েছে, সে দেশের বিমানবন্দর থেকেও সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহীদের আগমনের খবর পেয়ে তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: জেলে কী অবস্থা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের! এবার আসরে রামকৃষ্ণ মিশন! যা করল, শোরগোল
বিদ্রোহের ফলে দেশ জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দামাস্কাসে রবিবার সকাল থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। বাসিন্দারা ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। প্রেসিডেন্ট আসাদের সমর্থকেরা সরকার পতনের সম্ভাবনায় রাজধানী ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন।
গত কয়েক দিন ধরেই সিরিয়ার একের পর এক শহর দখল করেছেন বিদ্রোহীরা। ধীরে ধীরে তাঁরা এগিয়েছেন দামাস্কাসের দিকে। রবিবার সকালে রাজধানীও বিদ্রোহীদের দখলে। সিরিয়ায় গত ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে মদত দিয়েছিল আমেরিকা। পরবর্তী সময়ে আইএসের বাড়বাড়ন্ত রুখতে নেটো বাহিনীও হামলা চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন: Bayraktar TB2 Drone ভয় দেখাচ্ছে বাংলাদেশ, মুখে ঝামা ঘষে দিতে ভারতের অনেক ড্রোন
সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, গত কয়েক মাসে ইজরায়েলি বিমানহানায় আসাদ বাহিনীর অবস্থান বেশ দুর্বল হয়েছে। তাই সুযোগ বুঝে দামাস্কাসের দিকে অগ্রসর হয়েছেন বিদ্রোহীরা। আসাদের কাছে অবশ্য রাশিয়া এবং ইরানের সাহায্য রয়েছে। ইরাক থেকে শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীও সিরিয়া সেনার সাহায্যে সীমান্ত পেরিয়েছে বলে পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু রাজধানী রক্ষা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত পালিয়ে যেতে বাধ্য হলেন আসাদ। বিদ্রোহীদের আগ্রাসনের মুখে আপাতত তাঁকে পিছু হটতে হল।
সিরিয়ার টালমাটাল পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে নয়াদিল্লি। সুযোগ থাকলে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরতে বলা হয়েছে সিরিয়ার ভারতীয় প্রবাসীদের।