দিন কয়েক আগে নাসা-র তরফে ঘোষণা হয়েছে, এই উজ্জ্বলতম নক্ষত্র একটি নতুন সৌরচক্রে তথা সোলার সাইকেলে প্রবেশ করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে 'সোলার সাইকেল ২৫'। সাধারণত সূর্য যখন সোলার সাইকেলের মধ্যে দিয়ে যায়, তখন এর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রগুলির পরিবর্তন হয়। অনেক ক্ষেত্রে নক্ষত্রটির অবস্থার অল্পবিস্তর পরিবর্তন হতে পারে এবং গতিবিধিও বাড়তে পারে। অনেকসময় সৌরঝড়ও দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এতে সূর্যের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
advertisement
তবে এর জেরে কী প্রভাব পড়তে পারে আমাদের পৃথিবীতে? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সৌরচক্র বা সোলার সাইকেলের পরিবর্তনের সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে আমাদের গ্রহের। পৃথিবীর সঙ্গে নানাভাবে জড়িত এটি। আমরা যে সূর্যরশ্মি ও উত্তাপ পাই এই সোলার সাইকেল অনেক সময় সেই সৌর বিকিরণের পরিমাণকে বাড়িয়ে তোলে। এর পাশাপাশি এটি আমাদের মহাকাশ-ভিত্তিক নানা প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ সরবরাহ, রেডিয়ো কমিউনিকশনেও প্রভাব ফেলে।
তবে এটাই কিন্তু প্রথম সোলার সাইকেল নয়। এর আগে কবে হয়েছিল সৌরচক্রে প্রবেশ করেছিল সূর্য?
এর আগে ২০০৮ সালে শুরু হয়েছিল সোলার সাইকেল। ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত চলতে থাকে এটি। তবে যে নতুন সোলার সাইকেল শুরু হতে চলেছে, তা পাঁচ বছর সময় নেবে। অর্থাৎ এই সোলার সাইকেল চলবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। নাসা-র তরফে জানানো হয়েছে, এ নিয়ে অবশ্য আমাদের তথা এই গ্রহের প্রাণীকুলের দুশ্চিন্তার তেমন কোনও কারণ নেই। কারণ এই নতুন সোলার সাইকেলের চরিত্র এর আগের সোলার সাইকেল থেকে খুব একটা ভিন্ন নয়। আগেরটি প্রায় ১১ বছর চলেছে। তাই এটিও এই পাঁচ বছরে বিরাট কোনও প্রভাব ফেলবে না।
এ বিষয়ে নাসা-র হেলিও ফিজিক্স ডিভিশনের প্রোগ্রাম বিজ্ঞানী লিকা গুহঠাকুরতা জানিয়েছেন, বিগত ৪০ বছর ধরে প্রচেষ্টা চালানো চলছে। সূর্যকে আরও বিশদে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রতিটি গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি শক্তিশালী তরঙ্গ দেখে বোঝা গেছে, সূর্য তার নতুন সোলার সাইকেলে প্রবেশ করেছে। এই 'সোলার সাইকেল ২৫' তার শীর্ষস্তরে পৌঁছাবে ২০২৫ সালের জুলাই মাসে। একমত এনওএএ-এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের সৌর পদার্থবিদ ডাউগ বেইসেকারও।
উল্লেখ্য, নাসা ছাড়াও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার বিজ্ঞানীরাও সূর্যকে আরও বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করছেন। যাতে আগামী দিনে সূর্যে ঘটে চলা নানা প্রক্রিয়ার পূর্বাভাস ও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে আনা যায়।