আরও পড়ুন- "শান্তি বিষয়ে মনোযোগ" কামনা করে নতুন পাক প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন মোদি!
বেসরকারি বাজারে বেভাসিজুমাবের প্রতি শটের দাম ১১৩,০০০ শ্রীলঙ্কান টাকা (বা $৩৫৯)৷ বীমা না থাকায় ওষুধের পিছনে খরচ করতে গিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে বহু সাধারণ মানুষ। রোজান হোয়াইট রয়টার্সকে বলেন, “চিকিৎসায় এগনোর আগে আমাদের ওষুধ পাওয়া যাবে কিনা তা জানতে আমাদের হাসপাতালে ফোন করতে হয়। কিন্তু যখন নার্সরা বলেন যে হাসপাতালে ওষুধ নেই তখন আপনি কী করবেন?”
advertisement
দ্বীপরাষ্ট্রের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য পরিষেবা কীভাবে ভেঙে পড়ার মুখে তার একটি সামান্য উদাহরণ এই ঘটনা। গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের ঘাটতির কারণে বহু স্বাস্থ্যপরীক্ষা এমনকি অস্ত্রোপচারও স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- মর্মান্তিক! রোপওয়ে দুর্ঘটনার ৪০ ঘণ্টা পার, এখনও মাঝ আকাশে ঝুলে মানুষ! দেখুন ছবি
শ্রীলঙ্কার ফার্মাসিউটিক্যালস মন্ত্রকের সচিব জানিয়েছেন, রাষ্ট্র পরিচালিত হাসপাতালগুলিতে সরকার যে ১,৩২৫ টি ওষুধ সরবরাহ করে তার মধ্যে তিনটি জীবনদায়ী ওষুধ সম্পূর্ণ ফুরিয়ে গেছে এবং আরও ১৪০ টি প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব রয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাকসের সরকার ওষুধ এবং জ্বালানি সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করতেও অক্ষম, যার ফলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে এবং রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছেন।
কলম্বোর একটি প্রধান রাষ্ট্রচালিত হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাব হওয়ায় ৭ এপ্রিল থেকে শুধুমাত্র জরুরি, দুর্ঘটনা এবং ম্যালিগন্যান্সি সার্জারি করা হবে।
পর্যটনের উপর খুব বেশিই নির্ভরশীল এই দেশের অর্থনীতি। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে স্বাভাবিকভাবেই বিধ্বস্ত অর্থনীতি এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে তেলের দাম তীব্রহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যাপ্ত জ্বালানির অভাবেও ভুগছে এই দেশ।
২০১৯ সালে ব্যাপক হারে কর কমানোর এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) সঙ্গে আলোচনাকে বিলম্বিত করার সিদ্ধান্তের জন্য রাজাপাকসের প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। রাজাপাকসার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী আগে জানিয়েছিলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কর কমানো হয়েছিল, কিন্তু তারপরেই COVID-19 মহামারী সব হিসেব বদলে দেয়।
শ্রীলঙ্কার কাছে এখন মাত্র $১.৯৩ বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে, যা দিয়ে এক মাসেরও কম সময় আমদানি চালানো যাবে।
শ্রীলঙ্কার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়ে তাঁকে সতর্ক করে জানিয়েছে আগামী দিনে জরুরি চিকিত্সা পর্যন্ত বন্ধ করতে হতে পারে। “যার ফলে হু হু করে বাড়বে মৃত্যু” জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
