গত কয়েক বছরে পাকিস্তানে একাধিক আত্মঘাতী হামলায় চিনা নাগরিকরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন, যার মধ্যে অনেকগুলি হামলার দায় স্বীকার করেছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (BLA)-র মতো সংগঠন।
আরও পড়ুন: নাইটক্লাবের সামনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, গাড়ির ধাক্কায় আহত ২০ জন! ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শরিফ বলেন, পাকিস্তানের অর্থনীতির ওপর চিনা কোম্পানিগুলির আস্থা “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”। তিনি জানান, CPEC বর্তমানে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করেছে এবং এটি উভয় দেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
advertisement
চিনকে “বন্ধুসুলভ দেশ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে শরিফ বলেন, চিনা নাগরিকদের সুরক্ষা তার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
পাকিস্তানের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, চিনা নাগরিকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গৃহীত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তাদের যাতায়াতে নিরাপত্তা এসকর্ট পরিষেবা।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টি! একদিনে ৬৩ জনের মৃত্যু, বহু এলাকা জলমগ্ন, জারি জরুরি অবস্থা
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় চিন–পাকিস্তান ইকনমিক করিডর (CPEC)। সেদিন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ৫১টি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। CPEC হল বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)-এর অধীনে গৃহীত বৃহত্তম বিনিয়োগ প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি।
হাজার হাজার চীনা নাগরিক CPEC প্রকল্প এবং অন্যান্য বড় পরিকাঠামো প্রকল্পে কাজ করছেন, বিশেষ করে সিন্ধ, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে। এই এলাকায় চিনা কর্মীদের উপর প্রায়শই হামলা চালিয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলি, যার মধ্যে রয়েছে BLA ও পাকিস্তানি তালিবান।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজম অথরিটি (NACTA)-র সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে পাকিস্তানজুড়ে ১৪টি সন্ত্রাসবাদী হামলায় অন্তত ২০ জন চীনা নাগরিক নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছেন।
এই হামলাগুলোর জন্য বারবার পাকিস্তানকে দোষারোপ করে কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে চিন। বেজিং জানিয়েছে, এসব হামলা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে চিনের বিনিয়োগে “বাধা সৃষ্টি” করছে।
তবে পাকিস্তান, যে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয় বলে পরিচিত, এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। বহু বছর ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানকে একাধিকবার কাঠগড়ায় তুলেছে ভারত। কিন্তু প্রতিবারই চিন তার ‘অলওয়েদার’ মিত্র পাকিস্তানকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে।