ইসলামাবাদ: আফগানিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে ঘরে-বাইরে নাজেহাল অবস্থা পাকিস্তানের৷ এবার সেই দোষও ভারতের ঘাড়েই চাপাল ইসলামাবাদ৷ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খ্বজা আসিফ দাবি করেছেন, আফগানিস্তান আসলে ভারতের হয়েই ‘প্রক্সি ওয়ার’ লড়ছে৷ তাঁর দাবি, এই হামলার সব সিদ্ধান্তই নয়াদিল্লি থেকে নেওয়া হচ্ছে, কাবুল থেকে নয়৷
advertisement
গত শুক্রবার রাত থেকে পাক-আফগান সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়৷ তারপর গত বুধবার পর্যন্ত সেই সংঘর্ষ চলে৷ সীমান্তে আফগান তালিবান সেনা এবং অন্দরে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান জঙ্গিদের লাগাতার হামলা চলে পাক সেনা ঘাঁটিগুলোর উপর৷ সেনা সহ বহু সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয় দু’দেশেই৷ অবশেষে, ৪৮ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ৷ এই সংঘর্ষ বিরতি নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী৷
সম্প্রতি ৬ দিনের ভারত সফরে এসেছিলেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি৷ খ্বজা আসিফের অভিযোগ, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি, বাণিজ্যিক চুক্তি এই সবের আড়ালে ভারতে আসার অন্য উদ্দেশ্য ছিল মুত্তাকির৷
গত কয়েকদিন ধরে আফগান-পাক সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষের পরে বুধবার গভীর রাতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে৷ গত কয়েকদিনের সংঘর্ষে কয়েক ডজন সেনা ও সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ইসলামাবাদ সন্ধ্যা ৬টার (১৩০০ GMT) সময় যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করে৷ জানায়, আফগানিস্তানের তরফেই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করা হয়েছিল৷ তারা সায় দিয়েছে৷ উভয় সরকার দাবি করেছে, যে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে তাঁরা সচেষ্ট হবে৷
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চলাকালীন উভয় পক্ষই “গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে এই জটিল কিন্তু সমাধানযোগ্য সমস্যার একটি ইতিবাচক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে”।
কাবুলে, তালিবান সরকার জানিয়েছে, তারা তাদের বাহিনীকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে “যদি না পাকিস্তান তা লঙ্ঘন করে”। দক্ষিণ সীমান্তে এক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড লড়াই চলার পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যেখানে তালিবানরা পাকিস্তানি ঘাঁটি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়।
আফগানিস্তান পাকিস্তানের সরকার এবং সেনাবাহিনীকে ইসলামিক স্টেটের স্থানীয় খোরাসান শাখাকে সমর্থন করার এবং আফগান ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে তাদের আক্রমণে সহায়তা করার অভিযোগ করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান কাবুলকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) কে আশ্রয় দেওয়ার এবং পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর উপর তাদের আক্রমণে সহায়তা করার জন্য দোষারোপ করেছে।
গত সপ্তাহে কাবুলে পাকিস্তানি বিমান হামলার পর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার লক্ষ্য ছিল একজন টিটিপি নেতাকে হত্যা করা। আফগানিস্তান দাবি করেছে যে, হামলায় কোনও উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি তবে দুই দেশের মধ্যে ২,৬৪০ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমানা ডুরান্ড লাইন বরাবর পাকিস্তানি সীমান্ত চৌকি লক্ষ্য করে প্রতিশোধ নিয়েছে।